English

22 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

দ্রুত খননের উদ্যোগ নিন: দৌলতদিয়া-বাঘাবাড়ী নৌ রুটে নাব্যতা সংকট

- Advertisements -
নৌপথে পণ্য পরিবহন সাশ্রয়ী হলেও দেশের উত্তরাংশের সঙ্গে নৌযোগাযোগ রীতিমতো হুমকির মুখে পড়েছে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথ দিয়ে যেসব পণ্যবাহী কোস্টার জাহাজ চলাচল করত, সেগুলো এখন একেবারেই চলাচল করতে পারছে না। একে তো শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমে গেছে, অন্যদিকে পদ্মা ও যমুনার বুকে জেগে উঠেছে ছোট-বড় অনেক চর। নৌ চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টেও ডুবোচরের পাশাপাশি নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে।
পানির গভীরতা না থাকায় চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে ছেড়ে আসা মালবোঝাই কোস্টার জাহাজগুলো সরাসরি নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী বন্দরে যেতে পারছে না। পথে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে সেগুলো আটকা পড়ছে। শুক্রবারও সেখানে আটকা ছিল কয়লা, ক্লিংকার (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) ও সার বোঝাই ১০টি জাহাজ। সেগুলো থেকে পণ্য নামিয়ে বাল্কহেডে বোঝাই করে পাবনার নগরবাড়ী ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নেওয়া হচ্ছে।
এতে খরচ ও সময় দুটিই বেশি লাগছে। একসময় যমুনা দিয়ে বড় বড় জাহাজ উত্তরাঞ্চলে চলাচল করত। চিলমারী বন্দরের স্তবগান এখনো উত্তরের মানুষের মুখে মুখে। তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্রসহ আরো অনেক নদ-নদীর সুবাদে উত্তরের জীবনযাত্রা ছিল সমৃদ্ধ।
কিন্তু আজ জাহাজ তো দূরের কথা, শুষ্ক মৌসুমে একটু বড় নৌকার চলাচলও বাধাগ্রস্ত হয়। এর প্রভাব পড়েছে এলাকার কৃষি ও প্রকৃতিতে। প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ উত্তরাঞ্চলের সামগ্রিক অর্থনীতিতে। নদীপথের এমন দুর্দশার বড় কারণ ক্রমাগত পলি জমে নদী ভরাট হওয়া এবং নদী খননে পর্যাপ্ত উদ্যোগ না থাকা। জানা যায়, ব্রিটিশ আমলেও ভারতবর্ষে কয়েক শ ড্রেজারের একটি বড় বহর ছিল।
দেশ বিভাগের পর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে কোনো ড্রেজার ছিল না। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সরকার পাঁচটি ড্রেজার সংগ্রহ করেছিল। সেগুলো দিয়ে মূলত ঘাটগুলো সচল রাখা হতো। এরপর আর কোনো ড্রেজার আসেনি। ১৯৯৬ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ড্রেজার সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ পর্যন্ত তিন ডজনের মতো ড্রেজার সংগৃহীত হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের নৌপথগুলোকে ন্যূনতম নাব্যতা রাখার জন্য প্রয়োজন শতাধিক ড্রেজারের। তা না হলে যে পরিমাণ খনন করা হবে, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ পলি এসে নদীতে জমা হবে এবং নদী ভরাট পরিস্থিতি খারাপই হতে থাকবে।
নদীগুলোকে নাব্য রাখার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বড় চারটি নদীতে (ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই ও পুনর্ভবা) ক্যাপিটাল ড্রেজিং চলছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে খননকাজ শেষ হওয়ার কথা। ছোট নদীগুলোও খনন করা হচ্ছে, কিন্তু খননের এই গতি বাড়াতে হবে।
উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে পদ্মা, যমুনাসহ প্রধান নদীগুলোকে নাব্য করতেই হবে। নৌপথগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে। আমরা আশা করি, উত্তরাঞ্চলীয় নৌপথের প্রবেশমুখ দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌ চ্যানেলকে দ্রুত খননের মাধ্যমে জাহাজ চলাচলের উপযোগী করা হবে। পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্য নৌপথগুলোতে খননকাজ অব্যাহত রাখতে হবে।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন