সেসব প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে দেশ থেকে মুদ্রাপাচারের ভয়াবহ চিত্র। সাবেক মন্ত্রী, এমপি, আমলা, ব্যবসায়ীসহ অনেকেরই নাম এসেছে, যারা বিপুল অঙ্কের মুদ্রাপাচারে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
মুদ্রাপাচারের অভিযোগ আগেও পাওয়া গেছে। পেগাসাস, পানাম পেপারসসহ আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিবেদনেও অনেক বাংলাদেশির নাম এসেছে।
আর তখনই পাচারের অভিযোগগুলো জোরেশোরে আলোচনায় আসতে শুরু করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, কয়েক বছরের মধ্যে দুবাইয়ের সবচেয়ে অভিজাত এলাকায় বাংলাদেশি ১৩৪ জন ব্যক্তি মোট ৮৪৭টি ফ্ল্যাট, ভিলাবাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন, যার দাম ন্যূনতম সাড়ে তিন কোটি থেকে শতকোটি টাকা পর্যন্ত। তালিকায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ অনেক পরিচিত মুখও রয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয় ১০টি দেশে।
এগুলো হলো—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কেইমান আইল্যান্ড ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস। আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবদুস সোবহান গোলাপের নিউইয়র্কে ৯টি বাড়ি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বেলজিয়ামে বাড়িসহ বিভিন্ন সম্পদ থাকার অভিযোগ রয়েছে। এমন অভিযোগ আছে আরো অনেকেরই বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বসের তথ্য মতে, বাংলাদেশের আজিজ খান সিঙ্গাপুরেরও নাগরিক। ১.১২ বিলিয়ন ডলারের মালিকানাসহ তিনি এখন সিঙ্গাপুরের ৪১তম শীর্ষ ধনী। অথচ এই টাকা তিনি বাংলাদেশ থেকে কোনো বৈধ উপায়ে নিয়েছেন বলে তথ্য নেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে। তাহলে সিঙ্গাপুরে এত বিপুল অঙ্কের টাকার মালিক তিনি কিভাবে হলেন, তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। মুদ্রাপাচারে শেখ পরিবারের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে কিংবা অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে হলে মুদ্রাপাচার রোধে কঠোর হতেই হবে। যত অভিযোগ আসছে, দ্রুততম সময়ে সেগুলোর তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। অন্তত কিছু পাচারকারীরও যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়, তাহলে পাচারের গতি রোধ হবে।