প্রশ্ন হচ্ছে, জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলার বিষয়ে কি অগ্রগতি হয়েছে?
প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তিরস্কার ও বেতন হ্রাসের শাস্তি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগ নবীন হওয়ায় কম শাস্তির পাশাপাশি বড় দায় থেকেও অনেকে অব্যাহতি পাচ্ছেন।
যেমন—অবসরে যাওয়া কানুনগোর আইডি ব্যবহার করে নিয়মবহির্ভূতভাবে সাতটি নামজারি মামলা অনুমোদন করেও একজন সাবেক সহকারী কমিশনার-ভূমি (এসি ল্যান্ড) লঘুদণ্ড পেয়েছেন। তাঁর বেতন কমানো হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় অনিয়ম করায় আরেক কর্মকর্তার বেতন কমানো হয়েছে। নদীর বালু উত্তোলনে একজনের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেওয়ায় দুই বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতম ধাপে অবনমনের শাস্তি দেওয়া হয় তাঁকে।
ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে একজন সাবেক ইউএনওর বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি এক বছর বন্ধ রেখে গত ৫ মার্চ প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পদ্মা সেতু প্রকল্পে সরকারি খাস খতিয়ানের জমি বেআইনিভাবে অধিগ্রহণ দেখিয়ে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তখনকার এক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।‘পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ’ ও ‘অসদাচরণের’ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) লঘুদণ্ড পেয়েছিলেন।
শাস্তি দেওয়ার ছয় মাস না যেতেই ‘নবীন কর্মকর্তা’ বিবেচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমা (অব্যাহতি) পান তিনি। খবরে প্রকাশ, ২০২৩ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় এক হাজার কর্মকর্তার নামে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের ফাঁকফোকরে তিরস্কার কিংবা বেতন হ্রাস করে অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি না দেওয়ায় প্রশাসনে অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত আছে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আচরণ) বিধিমালা সংস্কার করা প্রয়োজন।
জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা জনগণের সেবক। সেবক হিসেবে সেবা দেওয়ার জন্য তাঁদের অনেক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে কর্মকর্তারা সতর্ক হবেন।