শুধু চট্টগ্রাম নয়, রাজধানীসহ সারা দেশেই ঘটছে এমন ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা এর জন্য মূলত নির্মাণ ত্রুটিকেই দায়ী করছেন। কিন্তু ভবনের নকশা অনুমোদনের এবং নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্ব যাদের, তারা কি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন?
বাংলাদেশ অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ একটি এলাকায় অবস্থিত। গত শনিবার দেশে ৫.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প বেশ বড় ধরনের ঝাঁকুনি সৃষ্টি করেছিল।
এ বছর শুধু বাংলাদেশেই এ রকম সাতটি ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এগুলোকে একটি বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছেন। তেমন ভূমিকম্প হলে এসব বাড়িঘরের কী অবস্থা হবে? বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হলে সারা দেশে প্রায় পাঁচ লাখ পাকা ভবন ধসে পড়বে। তাতে কত মানুষ মারা যাবে, কী পরিস্থিতি হবে- কল্পনা করতেও রীতিমতো কষ্ট হয়।তা সত্ত্বেও ভবন নির্মাণে এত অবহেলা, এত উদাসীনতা কেন? প্রকাশিত খবরে জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় গয়নার খালের সংস্কার কাজ চলছিল। এ সময় খাল থেকে ১৫-২০ ফুট দূরে থাকা তিনতলা এই ভবনটি পাশে থাকা আরেকটি তিনতলা ভবনের ওপর হেলে পড়ে।ভবন দুটির মধ্যে দূরত্ব ছিল মাত্র এক ফুটের মতো। তাৎক্ষণিকভাবে যেটা অনুমান করা যায়, ভবন নির্মাণে কোনো বিধিমালা মানা হয়নি। খাল ভরাট হবে, নিয়মিতই সংস্কার করতে হবে।খালের পারে থাকা ভবনগুলো সেভাবেই নির্মাণ করতে হবে।সারা দেশে প্রতিনিয়ত অনেক বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে। শুধু শহরে নয়, গ্রামাঞ্চলেও আজকাল অনেক বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনো নিয়ম-নীতি মানা হয় না। এমনকি নকশা প্রণয়ন বা অনুমোদন নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করা হয় না।এর ফলে আমরা এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকেই শুধু এগিয়ে যাচ্ছি। রাষ্ট্রের উচিত, এই বিপজ্জনক ধ্বংসযাত্রার গতি রোধ করা।সারা দেশে ভবন নির্মাণে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা যাতে মানা হয় সে জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি দুর্বল ভিত বা নির্মাণত্রুটি থাকা ভবনগুলো চিহ্নিত করে ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিতে হবে।