মাস্ক পরাসহ জরুরি স্বাস্থ্যবিধিগুলো মানার ক্ষেত্রে চরম উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। হাট-বাজার, বিনোদনকেন্দ্র, গণপরিবহনসহ জনসমাগমের স্থানগুলোতে বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক পরছেন না। ফলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা পরিস্থিতি আবারও অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়তে পারে।
গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে করোনায় আক্রান্তের হার অনেক কমে গিয়েছিল। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের হার নেমে এসেছিল ২ শতাংশের কাছাকাছি। অবশ্য তখনই বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন যে মার্চ মাসে আবার করোনা আক্রান্তের হার বেড়ে যেতে পারে। সেই আশঙ্কাই সত্য হলো। দেশে শুরু হয়েছে করোনা মহামারির নতুন ঢেউ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধিগুলো না মানা হলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
আমরা কি সেদিকেই যাচ্ছি? সংক্রমণ বাড়লেও সরকার এখনই লকডাউনে যাওয়ার চিন্তা করছে না। নানামুখী সতর্কতামূলক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ‘মাস্ক পরার অভ্যাস, কভিডমুক্ত বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে আগামীকাল রবিবার থেকে বিশেষ উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের পক্ষে কি সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, যদি না মানুষ সচেতন হয়? টিকা নেওয়ার ব্যাপারেও বহু মানুষের অনীহা রয়েছে। এই ক্ষতিকর অসচেতনতা শুধু কোনো মানুষেরই ক্ষতি করবে না, পুরো সমাজকে হুমকির মুখে ঠেলে দেবে।
৩০ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে শুরু হয়েছে বইমেলা। কোনো একজন মানুষও যেন মাস্ক ছাড়া মেলায় ঢুকতে বা থাকতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। গণপরিবহনে দূরত্ব রক্ষা ও মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে।
বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। পবিত্র রমজান মাস আসন্ন। মসজিদগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টিতে জোর দিতে হবে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের ঢল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একই সঙ্গে টিকা সংগ্রহ ও টিকা প্রদানের গতি বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে অন্যান্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। হাসপাতালগুলোতে করোনায় নিবেদিত ওয়ার্ড, শয্যাসংখ্যা ও আইসিইউসেবার সুযোগ বাড়াতে হবে।