রাজধানীর ভাটারা ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়ন ভেঙে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৮টি ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল ২০১৬ সালে। এসব এলাকার মানুষ তখন আনন্দে আত্মহারা হয়েছিল। তারা আশা করেছিল, দীর্ঘদিনের কষ্ট ছাপিয়ে এবার তারা সিটি করপোরেশনের নাগরিক সুবিধা নিয়ে কিছুটা উন্নত জীবনযাপন করতে পারবে। কিন্তু না, তাদের সেই আশায় গুড়েবালি।
ভাটারার প্রধান একটি সড়কের দুরবস্থায় তাদের কষ্ট কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। প্রকাশিত খবরে প্রধান সড়কটির দুরবস্থার যে চিত্র উঠে এসেছে তা রীতিমতো ভয়ংকর। খানাখন্দে ভরে আছে সড়কটি। জায়গায় জায়গায় বেরিয়ে আছে রড। নানা স্থানে নালার পানি উপচে সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আর বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। কয়েক দিন পর্যন্ত সড়কে পানি জমে থাকে। কাদা ও ময়লা পানিতে সয়লাব হয়ে থাকে। এলাকার অন্যান্য সড়কের অবস্থাও ভালো নয়। এসব সড়কে যানবাহন চালানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অনেক চালক এসব সড়কে আসতেই চান না। বয়স্ক লোকজনের পক্ষে এই সড়কে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, নতুনবাজার মোড় থেকে পূর্ব দিকে সৌদি দূতাবাস পার হয়ে বাঁ পাশে রয়েছে ভাটারা বাজার। বাজারের সামনে দিয়ে সড়কে ঢুকতেই চোখে পড়ে ব্যাপক ভাঙাচোরা অবস্থা। এমন ভাঙাচোরা রয়েছে ছোলমাইদ পর্যন্ত। কোথাও খানাখন্দ, কোথাও ঢালাই করা সড়ক ভেঙে বেরিয়ে আছে রড। প্রায়ই ভ্যান, রিকশা উল্টে যায়। যানবাহন এই সড়কে যেতে চায় না।
আবার কেউ যেতে রাজি হলেও কয়েক গুণ ভাড়া দাবি করেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানান, ভাটারার এই রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল ২০১২ সালে ইউনিয়ন পরিষদ থাকার সময়। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত আর কোনো কাজ করা হয়নি। জানা যায়, ২০২০ সালের জুলাই মাসে একনেক সভায় চার হাজার ২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।
প্রকল্পের কার্যকাল ধরা হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত অর্থছাড় হয়েছে মাত্র ৮০ কোটি টাকা। তাই কাজ এগিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এলাকার মানুষের দুর্দশা তো থেমে থাকছে না।
আমরা আশা করি ডিএনসিসির পক্ষ থেকে দ্রুত ভাটারার রাস্তা উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।