বিভিন্ন স্থানে সমবায় সমিতি গড়ে তুলে নিয়মিত সঞ্চয় সংগ্রহ করে কিছুদিন পর উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনার খবর মাঝেমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে আসে। আবার সমবায় সমিতির নামে ঋণ দিয়ে উচ্চহারে সুদ আদায়ের খবরও পাওয়া যায়। অন্যদিকে এমন অনেক সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলো অনুমোদন ছাড়াই ক্ষুদ্রঋণের কারবার করছে। এসব বন্ধের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, অনুমোদনহীন ক্ষুদ্রঋণের কারবার নিয়ে তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করতে হবে। আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে হবে।
তদন্তের সময় যদি অননুমোদিত বা লাইসেন্স ছাড়া ক্ষুদ্রঋণ কারবারি, সমবায় বা কোনো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় বন্ধের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশজুড়ে সমবায় সমিতির নামে সুদের কারবার চলছে। আবার কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে ঋণ দেওয়ার নামে উচ্চহারে সুদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ এসব সুদের কারবারির কাছে জিম্মি। তাদের সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে আদায় করা সুদের পরিমাণও আকাশছোঁয়া। ১০ হাজার টাকায় প্রতি সপ্তাহের সুদ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, কারো ক্ষেত্রে এক হাজার টাকা, মাসে সুদ হিসাবে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে তারা।
অথচ তাদের এই কারবারে সরকারের কোনো অনুমোদন নেই, সমিতির নামের কোনো নিবন্ধন নেই। অনিবন্ধিতভাবে গজিয়ে ওঠা এসব সমবায় সমিতি ও সুদের কারবারি থেকে ঋণ নিয়ে বহু মানুষ সুদের বোঝা টানতে টানতে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। প্রশাসনের চোখের সামনেই এই সুদের ব্যবসা চলছে। মৌসুমি ধান বাবদ এবং মাসিক, সাপ্তাহিক, দৈনিক ও হাটের ভিত্তিতে এসব সুদের ব্যবসা হয়।
সরকার নামমাত্র সুদে করোনাকালে প্রণোদনা ঋণ ও কৃষিঋণ দিচ্ছে। কিন্তু ঋণগ্রহীতাদের অভ্যাসগত কারণে কেউ কেউ চড়া সুদে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছেন এবং ঋণের জালে আটকে পড়ছেন। মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি চাইলে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি আইন ২০০৬-এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী চড়া সুদের কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।
এ ধরনের অবৈধ কারবার বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।