আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য তথ্য-প্রযুক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যে সরকারের নেওয়া নানামুখী পদক্ষেপে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে এসেছে। সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব অফিস ও সেবা সংস্থা ডিজিটাইজেশনের আওতায় চলে এসেছে। ই-কমার্সের পরিধি ক্রমেই বাড়ছে।
মানুষ ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে পারছে। কোনো বিল পরিশোধের জন্য এখন আর ব্যাংক বা অফিসে ঘুরতে হয় না। শিক্ষিত জনসংখ্যার একটি বড় অংশই আজ ইন্টারনেটসহ তথ্য-প্রযুক্তির উন্নততর সুবিধাগুলো খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারছে। ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে লাখ লাখ তরুণ তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছে। তারা ঘরে বসেই উপার্জন করতে পারছে। আসছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে ইন্টারনেটের চাহিদা।
বাড়ছে ব্যবহারকারীর সংখ্যা। এস্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি (ইডিসি) প্রকল্প শতভাগ বাস্তবায়িত হলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষও দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের জীবন সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাবে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের সাশ্রয়ী মূল্যে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া। এর ফলে আউটসোর্সিংসহ নানা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে গ্রামের মানুষ।
আর এভাবেই প্রযুক্তি হয়ে উঠতে পারে ভাগ্যবদলের হাতিয়ার। কিন্তু সমাজে প্রযুক্তির অপব্যবহার এত বেড়েছে যে তা এখন বড় ধরনের অপরাধের পর্যায়ে চলে গেছে। একটি চক্র বাংলাদেশে অবৈধ অনলাইন জুয়ার নানা প্ল্যাটফরমে জুয়া খেলতে যুবকদের আসক্ত করছে।
অনলাইনে জুয়া খেলার মাধ্যমে হুন্ডি করে বিদেশে অর্থপাচার চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের সদস্যসংখ্যা দেড় হাজার। এক হাজার ৫০০টি মাস্টার এজেন্টের মাধ্যমে এক মাসে তারা তিন হাজার কোটি টাকার অধিক লেনদেন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস অ্যাকাউন্ট খুলে পরিচয় গোপন রেখে যোগাযোগ করা হয়। ডিজিটাল কয়েন ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া খেলা খেলছে।
কয়েক মাস আগে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, বেটিং সাইটগুলোতে অ্যাকাউন্ট করলেই জুয়া খেলার পাশাপাশি কারবারের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য নিজস্ব যোগাযোগের অ্যাপও আছে।
প্রযুক্তির এই অপব্যবহার যেকোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনলাইন জুয়া বন্ধে ব্যবস্থা নেবে—এটাই প্রত্যাশা।