কিডনি বিকল হওয়া সারা বিশ্বেই একটি সাধারণ রোগ। এক্ষেত্রে দুঃসংবাদটি হলো, অনেকেই জানেন না, প্রাণঘাতী এ রোগ নীরবেই তাদের মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের হার ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ। বলা বাহুল্য, এ রোগের পরিণতি হলো কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া।
তখন বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস। কিন্তু হাতাশাব্যঞ্জক হলেও সত্য, দেশে সরকারিভাবে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট বা প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। অন্যদিকে ২৫০টির বেশি ডায়ালাইসিস সেন্টারের মধ্যে সরকারি সেন্টারের সংখ্যা ৪৫।
সরকারি ও বেসরকারিভাবে দিনে ১৫ হাজারের মতো রোগীকে ডায়ালাইসিস দেওয়া সম্ভব হয়, বাকিরা থেকে যান এ সুবিধার বাইরে।
কিডনি রোগীর নিয়মিত ডায়ালাইসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপন, দুটোই ব্যয়বহুল। এ প্রেক্ষাপটে কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ‘কিডনি সুরক্ষা বিমা’ চালু করার প্রস্তাব উঠেছে। উন্নত দেশগুলোয় ডায়ালাইসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় স্বাস্থ্যবিমার মাধ্যমে।
রোগী অথবা তার পরিবারকে কোনো টাকা দিতে হয় না। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয়ও চিকিৎসার আংশিক ব্যয় বহন করে থাকে সরকার। আমাদের স্বাস্থ্যবিমা কেন নেই, তা এক বড় প্রশ্ন। আমরা বিষয়টিতে জোর দিতে চাই।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, কিডনি রোগের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করা গেলে এ রোগ ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ প্রতিরোধ করা সম্ভব। সুতরাং আমাদের শেষ কথা, দেশে কিডনি প্রতিস্থাপন ও ডায়ালাইসিস কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়াতে হবে, আইনি জটিলতা দূর করতে হবে, চালু করতে হবে কিডনি সুরক্ষা বিমা এবং জোর দিতে হবে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করার সচেতনতা কর্মসূচিতে।