২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়েছে। মহামারিকালে পরীক্ষা ছাড়াই আগের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে সবাইকে পাস করানো হয়েছে। জিপিএ ৫ পেয়েছে দেড় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী। ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সকালে এক অনুষ্ঠানে এই ফল প্রকাশিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ডিজিটালি এই পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার ঘোষিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য না করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে একটি বছর যাতে নষ্ট হয়ে না যায় সে জন্য এভাবে ফল ঘোষণা করতে হয়েছে। উচ্চশিক্ষায় এবার উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বড় ধরনের প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ শিক্ষার্থীর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হওয়ায় গত ৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর মতো এইচএসসি পরীক্ষাও নেওয়া হবে না।
আইনে পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশের বিধান থাকায় এবার তা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। ফলে বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশের বিধান যুক্ত করে গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদে আইন সংশোধন করতে হয়। সংসদে পাস হওয়া তিনটি বিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সই করার পর ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’ গেজেট আকারে জারি করে সরকার। এরপর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রস্তুত, ঘোষণা ও সনদ বিতরণের জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোকে ক্ষমতা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
যে শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পাস করে আসছে তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও নেই। আজকের দিনের সঙ্গে সংগতি রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি উদ্যোগেই বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষার্থীদের পছন্দের বিষয়ে আসন বাড়াতে হবে। অন্যথায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা বাণিজ্য প্রতিরোধ করা যাবে না। নিশ্চিত করা যাবে না মানসম্মত উচ্চশিক্ষা। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।