বাংলাদেশে শহরাঞ্চলে বেসরকারি পর্যায়ে এমন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে যেগুলোর কোনো খেলার মাঠ নেই। আবার সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের মাঠ প্রায় বছরজুেড়ই নানা ধরনের কাজে ব্যবহার করা হয়। কোথাও মেলা হয়, কোথাও আবার প্রতি সপ্তাহে পশুর হাটও বসে।
গত বছর ডিসেম্বরে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ‘বাংলাদেশের নগর ও গ্রামীণ এলাকায় খেলার মাঠের সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক এক অনলাইন সংলাপ অনুষ্ঠানে বলা হয়, ‘খেলার মাঠে অবকাঠামো ও স্থাপনা নির্মাণ কিংবা বিভিন্ন ক্লাব বা স্বার্থান্বেষী মহলের দখলের কারণে শিশু-কিশোর ও এলাকাবাসী খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
নগর-গ্রাম সব জায়গায়ই খেলাধুলার সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে। নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনায় খেলার মাঠকে বিনোদন ক্ষেত্রের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামো হিসেবে বিবেচনা করা জরুরি। এলাকাভিত্তিক খেলার মাঠ তৈরির ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও ভাবনা-চিন্তা খুবই স্বল্প।
এই বাস্তবতায় খেলাধুলার সুযোগকে সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার মৌলিক অধিকার বিবেচনা করে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, কার্যকর বাস্তবায়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ প্রয়োজন।’ সংলাপে উল্লেখ করা হয়, ‘সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নগর ও গ্রামীণ এলাকায় সবার জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক খেলার মাঠ তৈরি না করা গেলে আমাদের স্বাস্থ্যগত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত প্রজন্মকে বহন করে যেতে হবে, জাতিগতভাবে যার মূল্য হবে ভয়াবহ।’
প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ফরিদপুর জিলা স্কুলের মাঠ দখল করে একের পর এক ভবন তৈরি হচ্ছে। বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের খেলার মাঠের পূর্ব কোণে ৩০ শতাংশ জমিতে স্কাউট ভবন নির্মাণ করা হয় ১৯৮২ সালে। এরপর ওই ৩০ শতাংশ জমির মধ্যে দক্ষিণে শিক্ষা ভবন নির্মিত হয়। সর্বশেষ গত নভেম্বরের শেষ দিকে সেখানে আবার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাজ শুরু হয়েছে।
এসব ভবন নির্মিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ ছোট হয়ে আসছে। ফরিদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী বলেছেন, যে ভবনে তাদের কার্যালয় ছিল সেটিতে জায়গার সংকুলান হচ্ছিল না। প্রশ্ন হচ্ছে, তাই বলে কি স্কুলের মাঠ দখল করতে হবে? ভবিষ্যতে যদি বিদ্যালয়ের সম্প্রসারণকাজ তথা ভবন স্থাপনের জন্য জমির প্রয়োজন হয় তখন কী হবে?