দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি আছে আবাসন সংকট। সব শিক্ষার্থীর জন্য আসনব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের অনেকে হলে আসন পেলেও সেখানে আশানুরূপ জীবনমান নিশ্চিত করা যায়নি।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই আবাসিক সমস্যা ও সংকট নতুন নয়।
দীর্ঘদিন থেকে এই সংকট চলে আসছে। হলগুলোর চাহিদা নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যার ওপর। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ খোলা হয়, তখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যায়। আর তখন প্রয়োজন হয় আবাসিক হলের।প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সময় প্রায় ২০০ ছাত্রীকে অ্যাটাচমেন্ট বা সংযুক্তি দেওয়া হয় নতুন হলে। পরে তাঁরা জানতে পারেন, সেই নতুন হলের নির্মাণকাজ পাইলিং পর্যায়ে রয়েছে।এরপর তাঁদের নতুন হলের অস্থায়ী ঠিকানা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারের (চিকিৎসাকেন্দ্র) তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ওঠানো হয়। কিন্তু সেখানে ক্যান্টিন, গ্রন্থাগার, রিডিং রুমসহ মূল হলের কোনো সুযোগ-সুবিধাই নেই।ছাত্রীদের থাকতে হয় গাদাগাদি করে। শৌচাগারে যেতে লাইন ধরতে হয়। এভাবে তাঁদের যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে পড়াশোনার। হেলথ কেয়ার সেন্টারের তৃতীয় ও চতুর্থ তলাকে সাময়িক ‘নতুন ছাত্রী হল’ নাম দেওয়া হয়েছে।২০১৯ সাল থেকে নতুন ছাত্রীদের সেখানে অস্থায়ীভাবে রাখা হয়। প্রথম বর্ষ পুরোটাই হেলথ কেয়ারে থাকতে হয় তাঁদের। পরে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল হলগুলোর গণরুমে স্থানান্তর করা হয়। যে তিনটি নতুন ছাত্রী হলের নির্মাণকাজ চলমান, তার দুটির পাইলিংয়ের কাজ চলছে। আর অন্যটির পিলারের কাজ চলছে।বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নতুন বিভাগ খোলা, প্রয়োজনীয়সংখ্যক আবাসন সুবিধার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি আবাসন সমস্যা ও সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। কাজেই নতুন বিভাগ খোলা বা অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির আগেই শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যা নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।সেই সঙ্গে বর্তমান হলগুলোর মানোন্নয়ন করাও জরুরি। হলের ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করতে হবে। হলগুলোর মানোন্নয়ন করতে বোধ হয় খুব বেশি অর্থেরও প্রয়োজন হবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।গুণগত শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও মানসিক বিকাশের জন্য যে উন্নত পরিবেশ দরকার, তা এখােন উপেক্ষিত।আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়, কিন্তু তাদের মানসম্মত আবাসনের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হয় না। অথচ একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেওয়া সম্ভব।