এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ‘সংক্রামক ব্যাধি চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ও কার্যকারিতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, দেশের হাসপাতালগুলোতে যেসব সংক্রমণ নিয়ে রোগীরা ভর্তি হয়, এর মধ্যে ৭৩ শতাংশ গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ।
এসব ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ব্যবহৃত সব অ্যান্টিবায়োটিক ৯০ শতাংশ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে চিকিৎসকরা বাধ্য হয়ে তৃতীয় ধাপের বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছেন, যেগুলো সাধারণত ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ব্যবহৃত হয়। উপসংহারে বলা হয়, এর পরও অপব্যবহার বন্ধ করা না গেলে অচিরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিকের আরো অনেক ধরনের অপব্যবহার হতে দেখা যায়। বিভিন্ন সময় গবেষণায় উঠে এসেছে, সাম্প্রতিক সময়ে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির খামারেও ব্যাপক হারে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্যবহারের সঠিক মাত্রাও মানা হচ্ছে না।
এসব প্রাণীর মাংস মানুষ খেলে সেই অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের শরীরেও চলে আসে এবং তাতে জীবাণুরা ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। অনেক চিকিৎসকও অপ্রয়োজনে রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ৮৭ শতাংশের বেশি করোনা রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে, যেখানে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন ছিল সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ রোগীর। আবার গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, ৩৩ শতাংশ রোগী হাসপাতালে আসার আগে কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিকের এ ধরনের অপব্যবহার কোনোমতেই কাম্য নয়।
অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চিকিৎসক, রোগী ও ওষুধ বিক্রেতা সবাইকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে।