পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে যত দিলদরাজই হোক না কেন, আইন অমান্য করতে পারে না। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সেই কাজটিই করে চলেছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
সম্প্রতি ইউজিসির প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনবহির্ভূত সুবিধা দিতে গিয়ে দুই বছরে সরকারের ২৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে। সরকার নিজে আয় করে না, জনগণের কাছ থেকে কর নিয়ে সব ধরনের ব্যয় নির্বাহ করে থাকে। সেই বিবেচনায় এটি জনগণেরই ক্ষতি।
অথচ তাঁদের অনেকেই দায়িত্ব ভাতা হিসেবে ১৫ শতাংশের বেশি নিয়েছেন। এটি জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর ২১ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম বিক্রি থেকে যে আয় হয়, তার ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দেওয়ার কথা। তারা জমা দিয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ।
ইউজিসির প্রতিবেদনে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, ইউজিসির কিছু কিছু সুপারিশ ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেছেন, ইউজিসি যেসব আপত্তি জানিয়েছিল, তা আইনের বিচারে ঠিক হলেও ন্যায়সংগত নয়।
আইন ন্যায়সংগত না হলে তার বিরুদ্ধে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে পারেন। কিন্তু যত দিন আইন বহাল আছে, তত দিন তা অমান্য করা যাবে না। আজ রোববার অনুষ্ঠেয় সিনেট সভায় ইউজিসির প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। আমাদের প্রত্যাশা, তারা অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞান সৃজন ও চর্চার মতো নীতিনৈতিকতার পীঠস্থান হিসেবে ভাবা হয়। এ রকম কোনো প্রতিষ্ঠানে সামান্য অনিয়ম ও দুর্নীতি কোনোভাবে কাম্য নয়।