প্রতারণার নানা কৌশলে বিভ্রান্ত সাধারণ মানুষ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর নানা পর্যায়ের নজরদারির কারণে এরই মধ্যে ছোট-বড় অনেক প্রতারককে আটক করা হয়েছে। তাদের প্রতারণার নানা কাহিনিও বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু তার পরও থেমে নেই প্রতারকচক্রের কারসাজি।
প্রতারকচক্র নানা ছুতায় মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সহজ-সরল মানুষকে প্রলুব্ধ করছে এবং সর্বশেষ তাদের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে।
এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের খবর মাঝেমধ্যেই আসে গণমাধ্যমে। কিন্তু তার পরও থেমে নেই প্রতারকচক্র। এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয়। সবার কাছে এসব প্রতিষ্ঠান ‘হায় হায় কম্পানি’ নামে পরিচিত। প্রকাশিত এক খবরে বলা হচ্ছে, মানুষের সরলতা ও বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে অন্তত ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ‘স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক’ (এসটিসি ব্যাংক) নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক নয়। তাদের ব্যাংকিং লাইসেন্সও নেই। তার পরও অবৈধভাবে ‘ব্যাংক’ শব্দটি ব্যবহার করে ব্যাংকের মতোই আমানত সংগ্রহ ও ঋণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে ওই চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান জানান যে ১৯৭৬ সাল থেকে সমবায় অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়েই তাঁরা ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর ও ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৫০টি শাখা খুলে সহজ-সরল মানুষকে বোকা বানিয়েছেন তাঁরা। হাতিয়ে নিয়েছেন অন্তত ৩০ কোটি টাকা।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীসহ সারা দেশে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান সমবায় সমিতির নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। অথচ সমবায় সমিতি আইনে স্পষ্ট বলা আছে, কোনো সমবায় সমিতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। কোনো ব্যক্তি এই ধারার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক সাত বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এসব অনিয়ম দেখার দায়িত্ব কাদের? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এত দিন কী করেছে? প্রতারণার শিকার সবার টাকা ফেরত দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।