বগুড়ার গাবতলী উপজেলার তেলিহাতা গ্রামে দুর্বৃত্তের ছোড়া এসিডে ঘুমন্ত অবস্থায় তিন মাসের শিশুসহ এক পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়েছে। তাদের ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা কিছুটা শঙ্কামুক্ত হলেও শিশুটির অবস্থা ভালো নয়। দগ্ধ শিশুর বাবা বলেছেন, কখনো কারো সঙ্গে বড় কোনো বিরোধ হয়নি তাঁর।
২০০২ সালে এসব আইন করার পরও খুব সহজেই এসিড মেলে কী করে? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসিড বেচাকেনা নিয়ন্ত্রণে আইনের কঠোর প্রয়োগ থাকলে এ ধরনের অপরাধ কিছুটা কম হতো। তাঁরা মনে করছেন, এই আইনের কার্যকারিতা তেমন নেই। অন্যদিকে আইনি প্রতিকারের চিত্রও বোধ হয় উদ্বেগজনক। মামলা দায়ের ও পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা রয়েছে। এমনকি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অপরাধ প্রমাণের ক্ষেত্রে অনেক দুর্বলতা রয়েছে—এমন অভিযোগও কোনো কোনো সময় গণমাধ্যমে আসে। অপরাধীদের প্রভাব-প্রতিপত্তি, রাজনৈতিক শক্তির ছত্রচ্ছায়া, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা, আইনজীবীদের আইনগত সহায়তা প্রদান না করা ইত্যাদি কারণে অপরাধীরা অনেক সময় পার পেয়ে যায়।
এসিড নিক্ষেপের মতো একটি সামাজিক ব্যাধি সহজেই নির্মূল হবে না। তাই আইনের বাস্তবায়নের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতারও প্রয়োজন। নারীর প্রতি সহিংসতা, বর্বরতা, পৈশাচিকতা রোধে সম্মিলিতভাবে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা খুব জরুরি। আইনি প্রতিকারের বিষয়েও কঠোর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসিডের সহজলভ্যতাও এ ধরনের অপরাধীদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সহায়তা করছে। এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন হওয়ার পরও এসিড সহজলভ্য হয় কী করে?
আগে এসিড সন্ত্রাস নিয়ে যেসব প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাওয়া যেত, বগুড়ার এই ঘটনাটি সেসব থেকে আলাদা। কাজেই এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। থানার ওসি জানিয়েছেন, কয়েকটি তদন্ত টিম এলাকায় কাজ করছে। দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।