দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনা নিয়ে মাঝেমধ্যেই গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশিত হয়। এই বিমানবন্দর ব্যবহারকারী যাত্রীদের অভিজ্ঞতাও খুব সুখকর নয়। কখনো কখনো যাত্রী ভোগান্তি চরমে ওঠে। বিদেশগামী কিংবা বিদেশ থেকে আসা অনেককে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
আবার দেশের প্রধান বিমানবন্দরের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। প্রশ্ন আছে ব্যবস্থাপনার আন্তরিকতা নিয়েও।
শুধু যাত্রীরাই নন, বিমানের অব্যবস্থাপনা ও সেবার ঘাটতি নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও অনেক সময় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। বিমানবন্দরের পণ্য পরিবহন ও সংরক্ষণে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পুরনো। খোলা আকাশের নিচে হাজার হাজার কোটি টাকার পণ্য পড়ে থাকে। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পণ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য বারবার অনুরোধ করেও তাঁরা সাড়া পান না। বিমানের লোডাররা নির্দিষ্ট লোকেশনে পণ্য রাখে না। প্রায়ই তারা অন্য স্থানে পণ্য রেখে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায়। রানওয়ে সংলগ্ন অংশেও মালপত্র পড়ে থাকে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়, অতীতে এমন প্রতিবেদনও দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর নতুন সাজে সাজতে যাচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে শিগগিরই যাত্রীসেবার মান থেকে শুরু করে ব্যবস্থা আধুনিক ও উন্নত হবে—এমন আশা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের। দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে বর্তমানে দুটি টার্মিনাল রয়েছে। এই দুটি টার্মিনাল এক লাখ বর্গমিটার জায়গার ওপর। এখন নির্মিত হচ্ছে তৃতীয় টার্মিনাল। এই টার্মিনালটির আয়তন বর্তমান দুটি টার্মিনালের দ্বিগুণের বেশি। টার্মিনালের পাশাপাশি দুটি হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে তৈরি করা হচ্ছে। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য দুটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। থাকবে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা ভবন।
তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে মেট্রো রেল। তৈরি হচ্ছে পৃথক একটি স্টেশন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বের না হয়েই মেট্রো রেলে করে নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারবেন। এতে যানজট ভোগান্তি কমবে যাত্রীদের।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আশা করছে তৃতীয় টার্মিনাল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের দিকে উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।
বিমানবন্দরে যাত্রীসেবার মান উন্নত হোক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।