রাজধানীতে এডিস মশার প্রজনন বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। গত মার্চেই বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, রাজধানীজুড়ে এপ্রিলে এডিস মশার দৌরাত্ম্য বাড়বে। প্রকাশিত খবরে সেই আশঙ্কার কথাই উঠে এসেছে। খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীর ৪.২৫ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রাক-মৌসুমি এডিস মশার ঘনত্বের জরিপে তাঁরা যেটি পেয়েছেন সেটি গত বছরের এই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। বৃষ্টিপাত শুরু হলে এই ঘনত্ব আরো বাড়বে। এডিস মশার ঘনত্ব বাড়লে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। এখনই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে অভিযান দ্রুত শুরু করা উচিত বলে মনে করেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাশাপাশি বৃষ্টির ধরনেও পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে আগামী দিনে মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়বে।
এমনিতেই বর্ষার মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকার ফলে মশার প্রজনন বেড়ে যায়। ডাবের খোসা, পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যাগ, ক্যানসহ অনেক পাত্র এখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হয়। পরিত্যক্ত এসব পাত্রেও পানি জমে থাকার ফলে ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী মশা সহজেই বংশ বিস্তার করতে পারে। এ ছাড়া রাজধানীর অনেক বাড়িতে এখন শখের বশে বাগান করা হয়। অনেকে টবে ফুলের গাছ লাগিয়ে থাকে। এসব পাত্রে পানি জমে থাকলে সেখানেও এডিস মশা বংশ বিস্তার করতে পারে।
পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মশার প্রজননস্থল কমানো এবং ধ্বংস করে মশাকে সহজভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। উপকারী প্রাণীর মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি পৃথিবীতে প্রচলিত আছে। গাপ্পি মাছের মাধ্যমে পরিবেশগতভাবে অল্প খরচে টেকসই মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কপিপোড এবং এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহারও পৃথিবীতে প্রচলিত আছে। এজাতীয় জীব নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়া জরুরি। ডেঙ্গু অদৃশ্য শক্তি নয়। মোকাবেলা করা খুব কঠিন নয়। ডেঙ্গু ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে আর এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।