মশার উৎপাত বেড়েছে রাজধানী ঢাকায়। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চলতি মার্চ মাসের শুরুতে মশা বৃদ্ধির হার বেড়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, চলতি মাসে কিউলেক্স মশা বাড়বে চার গুণ। যখন শীতের পরে তাপমাত্রা বাড়ে, তখন মশার বংশবিস্তার দ্রুততর হয়।
জীবনচক্রের গতিশীলতা বেড়ে যায়। এই সময়ে মশা ডিম বেশি পাড়ে। এসব কারণে মশা বাড়বে এবং বাড়ছে।
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রকৃতিতে থাকা মশার ডিম একযোগে ফুটেছে। একই সঙ্গে নর্দমা, ড্রেন ও ডোবার পানি পচে গেছে। বৃষ্টিপাত না হলে এবং পানি বহমান না থাকলে কিউলেক্স মশা জন্মানোর হার বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী ঢাকায় এখন যে মশা আছে, তার বেশির ভাগই কিউলেক্স মশা।
এর পাশাপাশি এডিস মশাও আছে। আর সে কারণেই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপযুক্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আগামী দিনগুলোতে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ ক্রমেই বাড়বে। বাস্তবে দেখাও যাচ্ছে তাই।
ঢাকায় এখন কিউলেক্স মশাই বেশি। কিউলেক্স মশার প্রজনন ক্ষেত্র হচ্ছে নর্দমা ও ডোবা। নর্দমা ও ডোবা পরিষ্কার এবং মশা নিয়ন্ত্রণের পুরো দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের নর্দমা ও ডোবার পানি চলমান করে দিতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে র্যাপিড অ্যাকশনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাঁরা বলছেন, উভয় সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি জায়গায় যেখানে পানি রয়েছে, সেখানে একযোগে লার্ভা নিধনের ওষুধ ছিটিয়ে দিতে হবে। ডোবা-নর্দমা পরিষ্কার করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক মশা দমনে ফগিংয়েও গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
টেকসই সমাধান পেতে সবার আগে প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করে মশা মারতে পরীক্ষিত ও কার্যকর ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। আবার ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস প্রজাতির মশা। এ মশা নালা-নর্দমার নোংরা পানিতে নয়, স্বচ্ছ পানিতে বংশবিস্তার করে।
সাধারণত বাড়ির আশপাশে ফেলে রাখা পরিত্যক্ত জিনিস এবং ঘরের ভেতরে জমিয়ে রাখা পানি বা ফ্রিজের পেছনে, ফুলের টব ইত্যাদিতে জমে থাকা পানিতেই এডিস মশা বংশবিস্তার করে। বহু বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। তাই নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে।