দেশে এখন ইটখোলার ছড়াছড়ি। বৈধ ইটখোলা বা সরকারের অনুমতি নিয়ে পরিচালিত ইটখোলার সংখ্যা যত, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি রয়েছে অবৈধ ইটখোলা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক খবরে দেখা যায়, কুষ্টিয়ায় ইটখোলা আছে মোট ১৯১টি। এর মধ্যে ১৭১টিই অবৈধ।
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ফুলবাড়িয়া উপজেলার বানার নদের খননকাজ শেষ হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে। ভাঙন রোধে নদের পারগুলো প্রশস্ত ও উঁচু করে বানানো হয়েছিল। অব্যাহত মাটি কাটার কারণে সেই পারগুলো অত্যন্ত ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। প্রতি রাতে খননযন্ত্র (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে ডাম্প ট্রাক ও লরিতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব মাটি যাচ্ছে টাঙ্গাইলের মধুপুর, ঘাটাইলসহ বিভিন্ন এলাকার ইটখোলায়। এই মাটি কাটা রোধ করা না গেলে আগামী বর্ষায় পারগুলো ধসে পড়বে এবং স্থানীয় মানুষ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অথচ স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার। শুধু পারের মাটি নয়, সারা দেশেই অবৈধভাবে নদীর মাটি ও বালু উত্তোলনের ব্যবসা রমরমা। অভিযোগ আছে, অনেক জায়গায় স্থানীয় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই চলে এই অবৈধ ব্যবসা। ফলে প্রতিবছর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নদীপারের হাজার হাজার বাসিন্দা। ইটখোলার এই আগ্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে উচ্চ আদালত থেকেও অনেক নির্দেশনা এসেছে, কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতির আরো অবনতিই হচ্ছে।স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের প্রতি সবচেয়ে বড় হুমকির কারণ সেকেলে পদ্ধতির ইটখোলা। এগুলোর দূষণের মাত্রা অনেক বেশি। এর বদলে ইট তৈরির নতুন ও পরিবেশবান্ধব অনেক পদ্ধতি এসেছে। বাংলাদেশেও পুড়িয়ে ইট তৈরির বদলে সেসব পদ্ধতি এগিয়ে নিতে হবে। অবৈধ ইটখোলা ও অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।