যশোরের কেশবপুর উপজেলার ১৬টি বিলে চার হাজার ২৩৫ হেক্টর জমি বছরের দুইবার দুই পক্ষের কাছে ইজারা দেওয়া হয়। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত এসব বিলের জমি ইজারা নিয়ে বোরো আবাদ করেন চাষিরা। জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মাছ চাষের জন্য ইজারা দেওয়া হয় ঘের মালিকদের। এসব বিলের চারপাশে বসবাসকারী প্রায় ১৫ হাজার কৃষক পরিবারের বছরের খাদ্যের সংস্থান হয় বোরো থেকে।
চলতি বছর সেই বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ঘের মালিকদের পানি নিষ্কাশনের নামে সময়ক্ষেপণ করায়। ফলে জলাবদ্ধতায় এবার প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ সম্ভব হচ্ছে না।
সমস্যাটি এবারই যে প্রথম দেখা দিয়েছে, তা নয়। গত বছর বিল খুকশিয়াসহ ২৭টি বিলে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে নিজস্ব অর্থায়নে পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নিয়েছিল এলাকাবাসী। এরপর উপজেলার বিল খুকশিয়া, বেতিখোলা, গরালিয়া, টেপুর, বলধালী, বুড়ুলি, ডহুরী, বাগডাঙ্গা, ভায়না বিলসহ গত বছর দুই হাজার ৬৮১ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। ভবদহসংলগ্ন এই ১৬ বিলের এক হাজার ৫৫৪ হেক্টর জমি পতিত ছিল। এ এলাকায় জলাবদ্ধতার কথা বললেই ভবদহের নাম উঠে আসে। ভবদহ বিলের বিস্তৃতি তিন উপজেলাসহ যশোরের বড় একটি অঞ্চলজুড়ে। যেসব নদী-খাল দিয়ে এ এলাকার পানি নেমে যেত, সেসব এখন ভরাট হয়ে গেছে।
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় চলতি বছর প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমি পতিত থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তার পরও মণিরামপুরের পূর্ব এলাকার বিলের পানি কেশবপুরের ২৭ বিল এলাকায় ফেলা হচ্ছে।
জলাবদ্ধতা এ এলাকার বড় সমস্যা। এসব বিলে অপরিকল্পিতভাবে মাছের ঘের গড়ে তোলায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার পলি জমে পাশের শ্রীহরি নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিল খুকশিয়ার ডায়ের খাল দিয়েও স্বাভাবিকভাবে পানি প্রবাহিত হতে পারছে না। ফলে বিলগুলোর জলাবদ্ধতা আরো তীব্র হয়েছে।
এলাকাবাসী বহুবার পাউবোকে এই বিলগুলোতে টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) করার কথা বললেও বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভবদহসংলগ্ন ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য দরকার নদী খনন। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।