বলা হচ্ছে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হবে প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ জনশক্তিসম্পন্ন রাষ্ট্রের জন্য বিশাল সম্ভাবনা। একই সময়ে স্বল্প পুঁজির রাষ্ট্রগুলোও দক্ষতার মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে আমাদের প্রয়োজন হবে প্রকৌশলে দক্ষ জনবল। প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় আরো বেশি জোর দিয়ে আমাদের এখন সেই মাপের জনবল তৈরি করতে হবে।
এটাই এখন সময়ের বাস্তবতা। আর সেই বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় এখন প্রকৌশল ও প্রযুক্তির বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রকৌশল ও প্রযুক্তির বিষয় খোলা হচ্ছে। সরকারও প্রকৌশল, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও কৃষির জন্য বিশেষায়িত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে। দেশের ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬টিই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে নামেই থাকুক না কেন, তাদের প্রায় প্রতিটিতেই প্রকৌশল ও প্রযুক্তির বিষয়গুলো রয়েছে।
বর্তমান বাস্তবতার দিকে দৃষ্টি দিলে আমরা দেখব, এখনো বাংলাদেশে বড় বড় অবকাঠামো তৈরি করছে বিদেশিরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর কারণ হলো আমাদের দক্ষ জনবল নেই। সেই দক্ষ জনবল তৈরি করতে আমাদের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যাচাই করতে হবে আগামী দিনের চাহিদা। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে জনগণকে কী কী দক্ষতা অর্জন করানো প্রয়োজন, তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী শিক্ষাক্রমও প্রণয়ন করতে হবে।
পাঠ্য বইকেন্দ্রিক শিক্ষাক্রম চিন্তা থেকে বের হয়ে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়াও প্রয়োজন। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে অগ্রগতির যে ধারা সূচিত হয়েছে, তা আরো এগিয়ে নিতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে, যাতে তারা এসডিজি বাস্তবায়নে সক্ষম হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আমাদের দেশে যারা প্রযুক্তিগত পণ্য উৎপাদন করছে, তাদের দারুণভাবে উৎসাহিত করতে হবে। জোর দিতে হবে প্রযুক্তি পণ্য গবেষণায়।
একটি প্রযুক্তিনির্ভর জনশক্তি গড়ে তুলতে আমাদের কাজ করতে হবে।