English

23 C
Dhaka
বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
- Advertisement -

অবিলম্বে এসব বন্ধ করুন: মৌলভীবাজারে টিলা কাটার হিড়িক

- Advertisements -

পাহাড়ধসে প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যাচ্ছে, যার প্রধান কারণ পাহাড় কাটা। গাছপালা কেটে পাহাড় ন্যাড়া করে ফেলা। পাহাড় কাটার ফলে শুধু পাহড়ে ধস হচ্ছে তা-ই নয়। এর ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

প্রাণবৈচিত্র্যে আঘাত আসছে। দেশের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংস হচ্ছে। ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়া দেশে পাহাড় হোক, টিলা হোক—কোনো কিছুই কাটা যাবে না। ২০১০ সালে আইনটি সংশোধন করে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান করা হয়েছে। কিন্তু আইনের যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে কঠোর আইন করে লাভ কী?
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় রীতিমতো পাহাড় কাটার হিড়িক লেগে গেছে। স্থানীয় এক প্রবাসী টিলা কেটে মার্কেট বানাচ্ছেন। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি টিলা কেটে মাটি বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছেন।
দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত বরাবর অল্প কিছু পাহাড়ি এলাকা রয়েছে। তার মধ্যে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর সিলেট এলাকায় পাহাড় কাটার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে জলাশয় ভরাট করা হয়। এই দুটি অঞ্চলের বেশির ভাগ ইটখোলা চলে পাহাড়ের মাটিতে। আবার পাহাড়ের গাছ কেটে এনে ইটখোলাগুলোতে পোড়ানো হয়। পুরোটাই পরিবেশ ধ্বংসের প্রক্রিয়া। অথচ আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর এসব রোধে কার্যত কিছুই করছে না। অভিযোগ আছে, অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশেষ সুবিধা নিয়ে পরিবেশ ধ্বংসের অবৈধ তৎপরতা রোধের পরিবর্তে বরং সহায়তাই করে থাকে। মৌলভীবাজার জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকেও বিভিন্ন সময় পাহাড় কাটার খবর পাওয়া যায়।
জানা যায়, বৃহত্তর সিলেটের অনেক জায়গায়ই রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় পাহাড় কাটার উৎসব। হ্যাজাক লাইট, এমনকি বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে শত শত মানুষ শাবল-গাঁইতি-কোদাল নিয়ে নেমে যায় এই মহাযজ্ঞে। মাটিভর্তি ট্রাকগুলো ঘোঁত ঘোঁত করে ছুটতে থাকে। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য যে পরিবেশ অধিদপ্তরের স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে সে খবর যায় না? আইন রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর ভূমিকা কোথায়?
আইন অনুযায়ী পাহাড় কাটা যাবে না। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাশে করাতকল থাকবে না। বন বা জনবসতির পাশে ইটখোলা করা যাবে না। ইটখোলায় কাঠ পোড়ানো যাবে না। অথচ সারা দেশেই চলছে আইনের বরখেলাপ। বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর সিলেটে চলছে অনেক বেশি পরিমাণে। অথচ এই দুই জায়গায়ই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনেক কার্যালয় রয়েছে, অনেক লোকবল রয়েছে। তারা কী করছে? তাদের কাজের জবাবদিহি কোথায়?
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা ও পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়, অনেক বক্তৃতা হয়, ‘পেপার ওয়ার্ক’ হয়, প্রচুর অর্থের লেনদেন হয়। কিন্তু কাজের কাজ যে প্রায় কিছুই হয় না, নির্বিচারে পাহাড় নিধন তারই একটি উদাহরণ। অবিলম্বে পাহাড় কাটা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। পরিবেশ সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা ও সংশ্লিষ্ট সবার কাজের জবাবদিহি নিশ্চিত করা হোক।
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন