English

17 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর হতে হবে: মুদ্রাপাচার বাড়ছেই

- Advertisements -

বাংলাদেশের অগ্রগতিতে একটি প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় মুদ্রাপাচারকে। মুদ্রাপাচার রোধে সরকারের বেশ কিছু বিশেষায়িত সংস্থা থাকলেও এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি নেই বললেই চলে। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৩৪টি দেশের মুদ্রাপাচারের তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তাতে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৭৪ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত (২০১৪ সাল বাদে) ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে চার হাজার ৯৬৫ কোটি মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় চার লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৯০ টাকা হিসাবে)।

মুদ্রাপাচারের এই ধারা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। এর আগে জিএফআই ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছরের যে তথ্য দিয়েছিল তাতেও দেখা গিয়েছিল, সেই সময়ে দেশ থেকে ছয় লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছিল। সুইজারল্যান্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের মুদ্রাপাচার বেড়েছে ২০ শতাংশ, পাচার হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

শুধু সুইস ব্যাংকেই নয়, আরো অনেক দেশের অনেক ব্যাংকেই বাংলাদেশ থেকে মুদ্রাপাচার হচ্ছে। মুদ্রাপাচারের স্বর্গভূমি হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন অফশোর ব্যাংকেও বাংলাদেশিদের অর্থ যাচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে ফাঁস হওয়া পানামা ও প্যান্ডোরা পেপারসেও অনেক বাংলাদেশির নাম এসেছে। কিন্তু মুদ্রাপাচার রোধে আমাদের কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

জিএফআইয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ২০১৫ সালে বিদেশে পণ্য কেনাবেচার যে খতিয়ান দিয়েছেন, তার ১৮ শতাংশই ছিল ভুয়া। সাধারণত ব্যবসায়ীরা রপ্তানি পণ্যের দাম প্রকৃত দামের চেয়ে কম দেখিয়ে এবং আমদানি পণ্যের দাম প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি দেখিয়ে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হিসাব থেকে বের করে নেয় এবং বিদেশে জমা করে। আবার হুন্ডি, বিনিময় কিংবা অন্যান্য উপায়েও দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়।

উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, প্রতিনিয়ত মুদ্রাপাচার বাড়ছেই। মুদ্রাপাচারের পরিমাণ ২০০৯ সালে ছিল ৫২১ কোটি ২০ লাখ ডলার, ২০১০ সালে ৬৮৪ কোটি ডলার, ২০১১ সালে ৮৭৩ কোটি ডলার, ২০১২ সালে ৭৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার এবং ২০১৩ সালে ৯৩৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। আর ২০১৫ সালে পাচার করা হয়েছে এক হাজার ১৮৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।

দেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে মুদ্রাপাচার রোধে আমাদের আরো কঠোর হতে হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যক্রম জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এসংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত বিচারের উদ্যোগ নিতে হবে।

Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন