দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে পারাটা সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটা সাম্প্রদিক সময়ে আরো বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। সাধারণত চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে গেলে বাজারে যেকোনো জিনিসের দাম বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। চাহিদা ও সরবরাহের সূত্রে নয়, বাংলাদেশের বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে নানা অজুহাতে। পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের একটি গোপন জোট বা সিন্ডিকেটের কথা বরাবরই আলোচিত হয়। এখন একেক সময় একেকটি পণ্যের দাম বাড়ানো হয়।
বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাপনা মোটেই সংগঠিত নয়। এর সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। কোনো কোনো সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। সিন্ডিকেট করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বেশি দামে কেনার মিথ্যা তথ্য দিয়ে কয়েক গুণ বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীর কারসাজিতে বাধ্য হয়েই ভোক্তাকে এসব পণ্য বেশি দামে কিনতে হয়। নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে বেশি বিপদে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।
বাজারদর নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দামও। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, ভরা মৌসুমেও কমেনি চালের দাম। মোটা ও মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৪ থেকে ৫২ টাকা দামে। সরু চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইল মানভেদে ৫৮ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বড় দানার মসুর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। ছোট দানার মসুর ডালের দাম বেড়ে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫২ থেকে ১৫৫ টাকায়। খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩৮ থেকে ১৪২ টাকায়। আটার দাম চলতি সপ্তাহে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা করে বেড়েছে।
সরকার বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারলে কোনোভাবেই পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব হবে না। কঠোরভাবে বাজার নজরদারি করা হলে এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সরকারকে মূল ভূমিকা নিতে হবে। বাড়াতে হবে নজরদারি। বাজারের সমান্তরালে একটি বাজারব্যবস্থাও গড়ে তুলতে হবে।