আশ্বাস-প্রলোভন দিয়ে সহজ-সরল মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খবর মাঝেমধ্যেই আসে গণমাধ্যমে। সবার কাছে এসব প্রতিষ্ঠান ‘হায় হায় কম্পানি’ নামে পরিচিত। প্রকাশিত এক খবরে বলা হচ্ছে, ‘বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ৬০০ গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন বাঁধবাসী একতাবদ্ধ শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালকরা।
সমিতির সদস্যরা বিভিন্ন অফিস ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না।’ প্রকাশিত খবরে আরো বলা হয়েছে, এই সমিতি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত। ওই সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় মাসিক সঞ্চয় ও সাপ্তাহিক সঞ্চয়ের কথা বলে টাকা উত্তোলন করতেন সমিতির লোকজন।
সহজ-সরল মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার ঘটনা তো আর এটাই প্রথম নয়। কয়েক দিন আগে বরিশালে চাকরি দেওয়ার নামে তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে আরএম গ্রুপ নামে একটি হায় হায় কম্পানি। নতুন চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে অফিস বন্ধ পান নবনিযুক্তরা।
শুধু তা-ই নয়, প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বাড়িওয়ালা, পত্রিকার মালিক এবং বিভিন্ন দোকান থেকেও কয়েক লাখ টাকার সেবা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে চক্রটি। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, গত মাসে স্থানীয় বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় আরএম গ্রুপ নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি। আবেদনের পরই তাঁদের চাকরি হয়ে যায়। জামানত হিসেবে তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেয় তারা।
চাকরি কিংবা বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে মানুষের টাকা আত্মসাতের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না, বরং দিন দিন বাড়ছে। সমবায় প্রতিষ্ঠানের নামের শেষে ব্যাংক শব্দটি ব্যবহার করে, মাল্টিপারপাস কম্পানি বা মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতামূলক অভিযান না থাকায় বেশি মুনাফার লোভে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিচ্ছে মানুষ।
তাই সাধারণ মানুষের মধ্যেও সচেতনতার প্রয়োজন আছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সবার আগে তৎপর হতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে এই প্রতারকদের।
নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর উচিত, এগুলোকে দমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের প্রতারণামূলক ব্যবসা খুলে বসতে না পারে।
আমরা আশা করব, প্রতারকদের খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে।