English

24 C
Dhaka
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

স্বাস্থ্যসেবা সচল রাখুন: বরগুনায় হাসপাতালের দুরবস্থা

- Advertisements -

চিকিৎসার জন্য বরগুনাবাসীর প্রধান ভরসা বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল। আড়াই শ শয্যার এই হাসপাতালটি রোগীতে ঠাসা থাকে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। সম্প্রতি চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

৪৩ জন চিকিৎসকের স্থলে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ১১ জন চিকিৎসক। ২১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে আছেন মাত্র চারজন। এতে রোগীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। আবার যে কয়েকজন চিকিৎসক কর্মরত আছেন তাঁদের অবসর বলে কিছুই থাকছে না।
উপকূলীয় এই জেলাটির বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র। রাজধানী কিংবা অন্য কোনো বড় শহরে গিয়ে চিকিৎসা করানো তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই জেলার স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের বেহাল দশা। এর আগেও এখানকার স্বাস্থ্য কার্যক্রমের বেহাল দশা নিয়ে অনেক খবর প্রকাশিত হয়েছে।
কিছুদিন আগে প্রকাশিত এক খবরে জানা যায়, জেলার আমতলী ও তালতলী উপজেলায় ৪৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টিরই বেহাল দশা। চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি বেশির ভাগ ভবনের দরজা-জানালা খুলে গেছে, দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। কিছু ভবনের ছাদেও ফাটল ধরেছে। বৃষ্টির সময় ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। এসব ক্লিনিকে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পথে।
অন্যান্য উপজেলার অবস্থাও প্রায় একই রকম। আর যেসব রোগীর বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের প্রধান ভরসা ছিল বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল। সেটিরও এখন বেহাল অবস্থা। বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক বয়স্ক রোগী জানান, ভর্তি হওয়ার পর দুই দিনে মাত্র একবার ডাক্তার তাঁকে দেখেছেন। গাইনি বিভাগেও ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। সম্প্রতি এই হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় সন্ধ্যার পর প্রসব বেদনায় কাতর হন গৃহবধূ রীমা বেগম। রাতে সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর স্বজনরা তাঁকে নিয়ে যান একটি বেসরকারি ক্লিনিকে।
সেখানেও চিকিৎসা না পেয়ে আরেকটি ক্লিনিকে যাওয়ার সময় পথেই সন্তান প্রসব করেন ওই গৃহবধূ। হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রোগীদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। অনেকে এখানে চিকিৎসক দেখাতে না পেরে গলাকাটা মূল্যের বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হয়। আবার অনেক রোগীকে রোগ পরীক্ষার জন্য বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে হয়।
দেশের বেশির ভাগ মানুষ এখনো সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ওপর নির্ভরশীল। অথচ এই খাতটির অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। ইউনিয়নভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা হাসপাতাল—সর্বত্র একই চিত্র। চিকিৎসক না থাকা, বিনা মূল্যে বিতরণের ওষুধ রোগীরা না পাওয়া, অ্যাম্বুল্যান্স, রোগ নির্ণয়ের সুযোগ না থাকা—এসব নিত্যদিনের চিত্র। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থার চিত্র এমন হলে দরিদ্র সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন