কিন্তু সরকারি ক্রয়ে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা কি নিশ্চিত করা গেছে? বাস্তবে কি তা সম্ভব হয়েছে? ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক গবেষণা থেকে জানাচ্ছে, বাংলাদেশে ই-জিপি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। বরং সরকারি বিভাগ, রাজনৈতিক প্রভাবশালী গোষ্ঠী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ত্রিমুখী যোগসাজশ নতুন মাত্রা পেয়েছে। গত মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশে ই-সরকারি ক্রয় : প্রতিযোগিতামূলক চর্চার প্রবণতা বিশ্লেষণ (২০১২-২০২৩)’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘ই-জিপির ফলে ক্রয়প্রক্রিয়া সহজতর হয়েছে, প্রক্রিয়াসংক্রান্ত ব্যয় কমেছে, তবে দরপত্র জমা ও কার্যাদেশপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাজার দখল ও একচেটিয়াকরণ অব্যাহত রয়েছে এবং বাস্তবে তার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে।’ ই-জিপির মূল লক্ষ্য উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সর্বনিম্ন মূল্য ও সর্বোচ্চ মান নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করছে না টিআইবি।তাদের মতে, প্রতিযোগিতামূলক স্বচ্ছ ক্রয় এখনো পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।ই-জিপিকে যোগসাজশমুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক করার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য টিআইবি ছয়টি সুপারিশ করছে। এর একটি হচ্ছে, দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণের বর্তমান ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ঢেলে সাজিয়ে সরকারি ক্রয় আইন, ২০০৬-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা; বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিতে এবং সম্ভাব্য যোগসাজশ বন্ধে একক দরপত্রপ্রবণ ক্রয় অফিসগুলোকে নজরদারির মধ্যে আনা। স্বচ্ছ, জবাবদিহিপূর্ণ, পক্ষপাতহীন, প্রতিযোগিতামূলক ও দুর্নীতিমুক্ত সরকারি ক্রয়ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ই-জিপির মাধ্যমে তৈরি হওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে সরকার ব্যবস্থা নেবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।