English

25 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ১৬, ২০২৫
- Advertisement -

স্থায়িত্ব নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিন: দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ধস

- Advertisements -
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী মাসে উদ্বোধনের চিন্তা-ভাবনা চলছিল। এই অবস্থায় কয়েক দিন আগে একটানা প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে সাতকানিয়ায় প্রায় অর্ধকিলোমিটার রেলপথের মাটি ও পাথর সরে গেছে। ফলে রেললাইন এবড়োখেবড়ো হয়ে পড়েছে।
এই অংশটি আবার নতুন করে তৈরি করতে হবে। এ ঘটনার পর অনেকে অনেক কথা বলছে। কেউ কেউ বলছে, প্রকল্প পরিকল্পনায় ভুল ছিল। কেউ বলছে, কাজের মান প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পে অর্থায়নকারী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বিশেষজ্ঞদল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে কিছু বিষয় নতুন করে ভেবে দেখতে বলেছে। এদিকে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট টেকনিক্যাল টিমও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। সবারই মত, প্রকল্পের দীর্ঘস্থায়িত্বের কথা বিবেচনায় রেখে উদ্ভূত সমস্যার সর্বোত্তম সমাধানের কথাই ভাবতে হবে।এটি ঠিক, এ বছর বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে যে ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে, বলা হচ্ছে, গত ১০০ বছরেও এমনটি হয়নি।
প্রায় শতবর্ষী মানুষ যাঁরা আছেন, তাঁরাও বলছেন, তাঁদের জীবনে এমন প্রবল বর্ষা আর কখনো দেখেননি। পৃথিবীব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। বিজ্ঞানীরাও বলছেন, আবহাওয়া ক্রমেই চরমভাবাপন্ন হবে। কাজেই এমন বৃষ্টি আবারও হতে পারে। অন্যদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমেই বাড়ছে।
২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা কয়েক ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে। সেই সময়ের বন্যা পরিস্থিতি, অস্বাভাবিক জোয়ার কি এই রেললাইন স্পর্শ করবে না কিংবা রেললাইন ডুবিয়ে দেবে না—এসব বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। এডিবি সেই লক্ষ্যে তিনটি বিষয় ভাবতে বলেছে।

তারা বলেছে, ক. আগামী ৫০ বা ১০০ বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এই এলাকায় কেমন হতে পারে, তা পর্যালোচনা করা; খ. রেলপথের উচ্চতা আরো বাড়ানো দরকার কি না ভেবে দেখতে হবে এবং গ. রেলপথ রক্ষায় সাঙ্গু নদীতে বাঁধ দেওয়া প্রয়োজন কি না, তা-ও ভেবে দেখতে হবে।

দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এত বিপুল রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের সর্বোত্তম উপযোগিতা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। ১০০ কিলোমিটার রেলপথের আর কোথাও বড় কোনো ক্ষতি হয়নি, কিন্তু এখানে অর্ধকিলোমিটার ধসে যাওয়ার কারণ কী, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে। অনেকেই বলছে, এখানে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।

যদি তা-ই হয়, তাহলে পর্যাপ্ত সেতু নির্মাণ করে এ সমস্যা দূর করতে হবে। এরপর এই রেলপথ রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম পর্যন্ত নেওয়া হবে। আমদানি-রপ্তানিসহ অনেক কাজেই এই রেলপথ ব্যবহৃত হবে। তাই এই রেলপথ নির্মাণে সর্বোচ্চ কারিগরি দক্ষতা নিয়োগ করা প্রয়োজন।

আমরা মনে করি, এডিবি যে পরামর্শগুলো দিয়েছে, সেগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক। এগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি টেকনিক্যাল কমিটি কিংবা পরামর্শক কমিটির মতামত নিতে হবে।

এতে যদি নির্মাণকাজ শেষ হতে আরো কয়েক মাস সময় লাগে, তা-ও দিতে হবে। কোনো ক্রমেই এত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প দুর্বলতা রেখে সম্পন্ন করা উচিত হবে না।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন