ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে। ক্ষমতায় এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অনেকেই এই পরিবর্তনের সুযোগ নিচ্ছে। অনেকে সুযোগ নেওয়ার স্বপ্নে বিভোর আছে।
জানিয়েছে স্বপ্ন হারিয়ে ফেলা চূড়ান্ত হতাশার কথা। কেন এমন হবে?
আহতদের চিকিৎসার কিছু খরচ এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার আগেই অনেককে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়েছে, ঋণ করতে হয়েছে। ঋণ পরিশোধ করার জন্য তারা এখন চাপে আছে। অনেককে এখনো বিশেষ বিশেষ ওষুধের জন্য নিজের পকেট থেকে খরচ করতে হয়।
রোগীর জন্য স্বজনদের হাসপাতালে আসা-যাওয়া, হাসপাতালের আশপাশে স্বজনদের থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ করতে হয়। হতাহত হওয়া অনেক ব্যক্তি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাঁদের অবর্তমানে সেই পরিবারগুলোর পথে বসার উপক্রম হয়েছে। রাষ্ট্রকে তাঁদের দিকেও নজর দিতে হবে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এমন অনেক হতাশার কথাই জানা যায়।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন শিক্ষার্থী রানা হোসেন (২৪)। ছররা গুলিতে তাঁর দুই চোখই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামনে মানুষ আছে, সেটি আবছাভাবে দেখতে পেলেও এখনো তিনি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘হাসপাতাল বিদায় করে দিতে চাইছে, কিন্তু বাড়িতে গিয়ে আমি কী করব?
আমার জীবন চলবে কিভাবে?’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজল মিয়ার (২৭) মাথায় গুলি লেগেছে। তাঁর স্ত্রী জানান, কাজলের ব্রেনের মুভমেন্ট বাচ্চাদের মতো। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন, কিন্তু সেই সংগতি তাঁদের নেই। একই ধরনের সমস্যা আহত অনেকেরই। রাষ্ট্র কি তাঁদের দায়িত্ব নেবে না?
আমরা মনে করি, গণ-আন্দোলনে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে। একইভাবে আহতদের সর্বোচ্চ সুচিকিৎসার ব্যবস্থা রাষ্ট্রকেই করতে হবে।