কয়েক বছর আগে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণে সবাইকে আরো সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে একটি পয়সাও ‘অহেতুক খরচ’ না করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্দেশ যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কি?
স্থানীয় পর্যায়ের সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নেওয়া কর্মসূচির অনেকটা অর্থই চলে যায় সুবিধাভোগী একটি গোষ্ঠীর কাছে।
এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধা নিয়ে একটি গোষ্ঠী নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটালেও যাদের জন্য বরাদ্দ আসে, তারা থেকে যায় আগের অবস্থায়ই।
প্রকল্পের নামে নানাভাবে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে অভিযোগও অনেক পুরনো। জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের পকেট ভারী করতে এবং দলের লোকদের কর্মসংস্থান করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা লুটপাটে অংশ নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। বাস্তবে কোনো উন্নয়নকাজ হয় না।প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সরকারের নানা প্রকল্প প্রস্তাবে আকাশচুম্বী ব্যয় ধরা হচ্ছে।এতে অনেক প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় বরাদ্দের চেয়ে অস্বাভাবিক ব্যয় অনুমোদন পেয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো প্রকল্পে বিপুল ব্যয় ধরা হলে তা বিচার-বিশ্লেষণ করে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করে পরিকল্পনা কমিশন।এর পরও কিছু প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে অনেক সময় ফাঁকফোকর থাকে, যা তাড়াহুড়ার কারণে অনেক সময় শনাক্ত করা সম্ভব হয় না।বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো গ্রহণের সময় বাস্তবায়নের বিষয়টি মাথায় না রেখে ব্যয়ের দিকেই বেশি নজর দেওয়া হয়।এর সঙ্গে যুক্ত হয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর এসব থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য। ফলে বেশির ভাগ প্রকল্পই আলোর মুখ দেখে না। পরিকল্পনায় ত্রুটি থাকার কারণেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকারের অর্থ ব্যয়ও বাড়িয়ে দেয়।যেকোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের আগেই সময় মেনে চলা, দুর্নীতিমুক্ত রাখা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতামুক্ত রাখার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। অনেক প্রকল্পেই বেশি ব্যয় প্রস্তাব করা হয়।অনেকে জেনেবুঝেই এই কাজ করেন। পরিকল্পনা কমিশনকে প্রকল্পের ব্যয় বিভাজন খুব সূক্ষ্মভাবে দেখতে হবে। প্রতিটি প্রকল্পে ব্যয় প্রস্তাবের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তবেই বরাদ্দ দিতে হবে। সাশ্রয়ী হতে হবে।