প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে দৈনিক চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। অথচ গত রবিবার গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে দুই হাজার ৬৯১ মিলিয়ন ঘনফুট। গত মাসে দৈনিক সরবরাহ ছিল দুই হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট এবং আগের মাসে ছিল প্রায় তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ সরবরাহ ক্রমেই কমছে এবং সংকট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে।
এরই মধ্যে আরো দুর্ভাবনা জাগিয়েছে একটি এলএনজি টার্মিনাল দুই মাস বন্ধ রাখার ঘোষণা। এমনটি হলে দৈনিক আরো প্রায় ৫০০ ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ কমে যাবে।
এতে গ্যাস সরবরাহ চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে যাবে এবং মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠবে।
এলএনজিকে রূপান্তর করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার জন্য দেশে দুটি ভাসমান টার্মিনাল রয়েছে। একটি যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জির এবং অন্যটি সামিট গ্রুপের।
টার্মিনাল দুটি দৈনিক এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে পারে। স্বাভাবিক সময়ে দুই টার্মিনালের মাধ্যমে ৮০০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু কয়েক দিন ধরে সরবরাহ করা হচ্ছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।জানা গেছে, এর মধ্যে এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালটি ১ নভেম্বর থেকে দুই মাস মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হবে। তদুপরি, নানা কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দর ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমান ডলার সংকটের মধ্যে এলএনজি আমদানি কতটা স্বাভাবিক রাখা যাবে, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। অন্যদিকে গ্যাসসংকট বেড়ে গেলে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনেও তার প্রভাব পড়তে পারে।প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, এরই মধ্যে অনেক শিল্প-কারখানায় গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাসের চাপ কম থাকায় সিএনজি স্টেশনগুলোতে যানবাহনের দীর্ঘ সারি থাকছে, তা-ও প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক এলাকায় বাসাবাড়িতে পাইপে গ্যাসের সরবরাহ থাকছে না বললেই চলে। রান্নাবান্নায় মানুষকে রীতিমতো দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ সময়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের এমন সংকট হলে কিংবা মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেলে, তা নির্বাচনেও প্রভাব ফেলবে। তাই সংকট মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়া প্রয়োজন।