রাজধানী ঢাকায় মশার উৎপাত বেড়েছে। কোনোভাবেই মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দেশে গত দেড় মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় এডিস মশা কমলেও বেড়েছে কিউলেক্স মশা। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি হলো কিউলেক্স মশার পিক টাইম।
ড্রেন, ডোবা, নালা, খাল, বিল—এসব মূলত মশার প্রজননস্থল। দীর্ঘ সময় জমে থাকা আবর্জনা থেকে মশা জন্মাচ্ছে। মশার ডিমগুলো একযোগে ফুটেছে। একই সঙ্গে নর্দমা, ড্রেন ও ডোবার পানি পচে গেছে। বৃষ্টিপাত না হলে এবং পানি বহমান না থাকলে কিউলেক্স মশা জন্মানোর হার বেড়ে যায়। তাই যতই ওষুধ ছিটানো হোক না কেন, এসব জায়গা পরিষ্কার করা না হলে মশা কমবে না।
নর্দমা ও ডোবা পরিষ্কার এবং মশা নিয়ন্ত্রণের পুরো দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটা ভুল পথে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন। অকার্যকর কীটনাশক ফগিং যতই করা হোক না কেন, এতে পরিবেশদূষণ হবে, মানুষের ক্ষতি হবে, কিন্তু মশা মরবে না। তাই আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হবে।
সেই বিকল্পটা কী হতে পারে? তাঁদের মতে, পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মশার প্রজননস্থল কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। উপকারী প্রাণীর মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
নির্দেশনা অনুযায়ী বিজ্ঞানসম্মতভাবে কীটনাশকের ব্যবহার করতে হবে। অবশ্যই তাদের নর্দমা ও ডোবার পানি চলমান করে দিতে হবে। ডোবা-নর্দমা পরিষ্কার করতে হবে। একই সঙ্গে সেখানে লার্ভিসাইড, অ্যাডাল্টিসাইট কিংবা গাপ্পি মাছ ছাড়তে হবে।
মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে র্যাপিড অ্যাকশনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, উভয় সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি জায়গায় যেখানে পানি রয়েছে, সেখানে একযোগে লার্ভা নিধনের ওষুধ ছিটিয়ে দিতে হবে।
মশা ও মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনকেই বেশি দায়ী করছেন।
জলবায়ুর পরিবর্তন আমরা রোধ করতে পারব না। কিন্তু আমরা মশা নিধনে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারি। স্থায়ীভাবে মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে বছরব্যাপী সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। সারা বছরই মশা নিধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। দুই সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি নাগরিকদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে।