গত ১২ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি পাঁচতলা বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণে দুজনের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনায় আরো অন্তত ১৫ জন নারী, পুরুষ ও শিশু দগ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রান্না করার গ্যাস কোনো কক্ষে জমে ছিল। তা থেকে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ওই ফ্ল্যাটসহ পাশের একটি বাড়ি ও একটি দোকানের দেয়াল ধসে পড়ে।
দেশে গ্যাসজনিত দুর্ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এ বছরের জুনে ঢাকার মগবাজার ওয়্যারলেস গেটে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে একটি ভবন আংশিক ধসে পড়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফতুল্লার একটি মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণে ৩০ জনেরও বেশি মুসল্লির মৃত্যু হয়। এ বছরের এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তিনতলা একটি বাড়িতে গ্যাস বিস্ফোরণে নারী ও শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হয়। গত আগস্টে রাজধানীর মিরপুরে একটি বাসায় গ্যাসের লাইনে ‘বিস্ফোরণ’ থেকে আগুন লেগে দগ্ধ হয় সাতজন।
প্রায়ই আবাসিক ভবনে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আবাসিক ভবনগুলোতে জমে থাকা গ্যাস থেকে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে তার বেশির ভাগই অসচেতনতার কারণে। অনেকেই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে গ্যাসের চুলার চাবি বন্ধ করতে ভুলে যান। ভোরে কেউ ঘুম থেকে উঠেই দিয়াশলাই জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরিত হয়ে ঘটে দুর্ঘটনা। আর তাই জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণ প্রতিরোধের বিষয়টিও সবার জানা দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরজা-জানালা বন্ধ থাকলে জমে যাওয়া এ গ্যাস আগুনের ছোট একটি স্ফুলিঙ্গ পেলেই ভয়ংকর বোমার মতো কাজ করে। বিদ্যুতের লাইট, ফ্যান বা অন্যান্য যেকোনো যন্ত্রপাতির সুইচ অন-অফ করলে সেখানে ছোট একটি স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয়, যা অনেক সময় দেখা যায় না; কিন্তু জমে থাকা গ্যাসে তা বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য যথেষ্ট।
বিস্ফোরণের প্রতিটি ঘটনার পর একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন হয়। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেয়, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। গ্যাস বিস্ফোরণ রোধে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন