জীবাণুর সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। উন্নত দেশগুলোতে প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোথাও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে ওষুধের দোকানে চাইলেই অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়। মুড়ি-মুড়কির মতো মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করে।
এরপর এই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলেও সেই জীবাণু ধ্বংস হয় না। রোগ মারাত্মক হয়। এমন পরিপ্রেক্ষিতে গত রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পাঠ্যপুস্তকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স প্রসঙ্গ অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটির আয়োজন করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।
বৈঠকের মূল প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, প্রতিবছর সারা বিশ্বে ২২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের প্রভাবে মারা যায়। এ ছাড়া ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের সঙ্গে সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৯ লাখ ৫০ হাজার।
এর মধ্যে ১২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ সরাসরি রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়ার কারণেই মারা গেছে। পরিস্থিতি ক্রমেই আরো খারাপ হচ্ছে। এ কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সারা দুনিয়ার সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও পেশাজীবী ব্যক্তি ও সংগঠন অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে তৎপর হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাঠক্রমে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হলে সচেতনতা তৈরিতে তা বড় ভূমিকা রাখবে।
আমরা মনে করি, অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। আইনে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির জন্য জরিমানা বা শাস্তির বিধান রয়েছে, কিন্তু সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। চিকিৎসা পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ শীর্ষক এক গবেষণায় দেখা যায়, ৮৭ শতাংশের বেশি করোনা রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে, যেখানে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৭ শতাংশের। পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। পাঠক্রমেও অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।