English

22 C
Dhaka
শুক্রবার, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
- Advertisement -

সংস্কার সম্পন্ন হোক: বিশ্বব্যাংকের সমর্থন

- Advertisements -
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার রক্তঝরা অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে হাত দেয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচনব্যবস্থা, সংবিধান, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে ছয়টি সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
সম্প্রতি বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনগুলো জনগণ, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের কাছে দিয়ে দেব, যাতে তারা একমত হতে পারে; কী করলে তাদের ভালো হবে।
আমি আশা করি, সবাই মিলে প্রস্তাবগুলো একমনে গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে।’ একই দিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার গেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ছয় সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুধীসমাজের সঙ্গে আলোচনা করবে।
তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে কতটুকু সংস্কার এখনই করতে হবে, কতটুকু পরে করা যাবে, এখনই যেগুলো করা যাবে তা করতে হলে সাংবিধানিক সংস্কার প্রয়োজন হবে কি না, তা ঠিক করা হবে।
বিস্তারিত আলোচনার পর অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও সুশীল নাগরিকের সবার মতামতের ভিত্তিতে যেসব সংস্কার নিয়ে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছবে, সেগুলোতে সবাই স্বাক্ষর করবে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশনের প্রথম বৈঠক হবে।
রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার অবশ্যই একটি বড় কর্মযজ্ঞ। সংস্কারটি খুব জরুরি দরকার।
কারণ এ দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, সুশাসন, বৈষম্যহীন সমাজ, সমৃদ্ধি, শান্তি-শৃঙ্খলা আর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু বারবারই আমরা দেখেছি, মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেছে। স্বেচ্ছাচারিতা, ঘুষ-দুর্নীতি, লুণ্ঠন, অর্থপাচার, আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি, পেশিশক্তির ব্যবহার, অবৈধ কর্মকাণ্ড, বৈষম্য, মানবাধিকার লঙ্ঘন থেমে থাকেনি। বাংলাদেশের রাজনীতি এক চরম দুঃসময় পার করে এসেছে। রাজনীতিতে আদর্শ, জনকল্যাণ, আত্মত্যাগ ও নৈতিকতা ক্রমেই দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে।
জনস্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রাজনীতির ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়েছে সাধারণ মানুষ। এ জন্যই সংস্কার খুব জরুরি দরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত চলমান সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার গত মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কর্মসূচির প্রতি বিশ্বব্যাংকের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অপেক্ষা করছে অসম্ভবকে সম্ভব করার সুবিশাল কর্মপরিধি। আমাদের প্রত্যাশা, সরকারের সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আন্তরিক সহযোগিতায় সংস্কার বাস্তবায়িত হোক।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন