English

15 C
Dhaka
শনিবার, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
- Advertisement -

সংস্কারের পরেই হোক নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময়

- Advertisements -
আদর্শভিত্তিক রাজনীতি, সুশাসন ও দেশের উন্নয়ন হাত ধরাধরি করে চলে। আদর্শচ্যুত রাজনীতির কাছ থেকে সমাজ ও দেশ কিছু আশা করতে পারে না। এতে বরং গণতান্ত্রিক চর্চা বিঘ্নিত হয়। রাজনীতির গুণগত মান প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতা দল ও নেতৃত্বকে পরিশুদ্ধ করে। স্বাধীনতা-পরবর্তী পাঁচ দশকে দেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। স্বার্থান্বেষী রাজনীতির সুযোগ নিয়ে বিস্তৃত হয়েছে পেশিশক্তি। অনেকের জন্য রাজনীতি হয়ে ওঠে বিত্তবৈভব অর্জনের হাতিয়ার।

তখন সমষ্টির কল্যাণের চেয়ে ব্যক্তির উদরপূর্তিই হয়ে ওঠে রাজনীতির ধারা।

জনস্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রাজনীতির ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়েছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অসুস্থ ধারার অনুপ্রবেশ ঘটে। রাজনীতিতে আদর্শ, জনকল্যাণ, আত্মত্যাগ ও নৈতিকতা ক্রমেই দুর্বল থেকে দুর্বলতর হওয়ায় বেড়ে যায় অর্থ আর পেশিশক্তির প্রভাব।সমষ্টির কল্যাণের চেয়ে ব্যক্তির উদরপূর্তিই যেন রাজনৈতিক ধারা হয়ে ওঠে। টেন্ডারবাজি, দখলবাজি, লুটপাট, খুনখারাবিসহ নানা অপকর্ম রাজনীতির অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে।

অতীতে আমরা দেখেছি, রাজনীতি আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছে। গণতন্ত্রচর্চাহীনতার সুযোগে সুযোগসন্ধানীরা রাজনৈতিক দলে ঢুকে পড়েছে। স্বজনপ্রীতি আর প্রশ্রয়নির্ভর রাজনীতিতে ছিল না জবাবদিহি।এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে। রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। এর জন্য দরকার সংস্কার, যা রাজনীতির গুণগত মানের পরিবর্তন করবে। দেশের রাজনীতিকে ঋদ্ধ করবে। আদর্শচ্যুত রাজনীতি সমাজ বা রাষ্ট্রকে কিছু দেয় না। নেতৃত্ব অযোগ্য, অদক্ষ হলে সৃষ্টি হয় নৈরাজ্য। তাই আদর্শ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রয়োজন। সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি সুস্থ গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত।

এসব বিষয় নিয়েই গত শনিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছে। তারা পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, সংসদ নির্বাচন—এগুলোর একটা সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করার কথা বলেছে। এসব দল মনে করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন হতে হবে। সেটা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্যও ভালো, রাজনৈতিক দলের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো। তবে সংস্কার করার আগে কোনো নির্বাচন কোনো অবস্থায়ই বাঞ্ছনীয় নয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, সরকারের আপাতত প্রধান দায়িত্ব দুটি। প্রথমত, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা এবং দ্বিতীয়ত, প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ শেষ করে একটি ভয়ভীতিহীন পরিবেশ তৈরি করে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। রাজনৈতিক দলগুলোও মনে করে, সংস্কার করার আগে কোনো নির্বাচন কোনো অবস্থায়ই বাঞ্ছনীয় নয়। আগে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ শেষ করে একটি ভয়ভীতিহীন সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। প্রতিটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সবাইকে একটি ঐকমত্যে আসতে হবে।

মতবিনিময়সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শিগগিরই সংস্কারের বিষয়ে একটি ‘বিস্তৃত

রূপরেখা’ দেবেন। সংস্কারের একটি কাঠামো দেবেন। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তাবের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে জানাবে তারা সরকারকে কতটা যৌক্তিক সময় দেবে। সবার মতামতের ভিত্তিতে সংস্কার ও দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তনের বিষয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা হবে।

সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি সুস্থ গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। রাজনৈতিক দলগুলো যদি নিজেদের কাজের প্রতি যত্নশীল হয়, তাহলে তা সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাজনীতি পরিশুদ্ধ হবে। শুদ্ধিকরণের মাধ্যমেই তরুণ প্রজন্ম থেকে যোগ্য ও শিক্ষিত মুখকে রাজনীতিতে আকৃষ্ট করতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন