English

24 C
Dhaka
বুধবার, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
- Advertisement -

সংরক্ষণে কার্যকর উদ্যোগ নিন: ধ্বংসের মুখে রুপালি ইলিশ

- Advertisements -
বাংলাদেশের প্রধান মৎস্যসম্পদ হলো রুপালি ইলিশ। পৃথিবীতে প্রতিবছর যত ইলিশ ধরা পড়ে, তার ৬০ শতাংশই ধরা পড়ে বাংলাদেশের জলসীমায়। বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১ শতাংশই আসে এই ইলিশ থেকে। তাই ইলিশ একান্তভাবেই বাংলাদেশের মৎস্যসম্পদ।
কিন্তু অতিরিক্ত আহরণের কারণে সেই ইলিশ আজ ঝুঁকির মুখে। শুধু মাছ ধরা নয়, মা-মাছ, এমনকি ডিম-বাচ্চাও ছেঁকে তুলে নেওয়া হচ্ছে।
তদুপরি অসংখ্য ডুবোচর ও পানিদূষণের কারণে নষ্ট হচ্ছে এর বেঁচে থাকা ও প্রজননের পরিবেশ। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, এভাবে চলতে থাকলে মাছটি বাংলাদেশের জলসীমা ছেড়ে ভারতীয় জলসীমায় চলে যেতে পারে।
ইলিশ সংরক্ষণ ও বংশবিস্তারের সুযোগ করে দিতে সরকার আইন প্রণয়ন করা ছাড়াও বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়।এর মধ্যে আছে বিশেষ বিশেষ সময়ে কিছু দিনের জন্য মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা; এ সময় জেলেদের বিশেষ সহায়তা প্রদান, মাছ ধরার জালের ধরন নির্ধারণ করা; জাটকা বা ছোট ইলিশ ধরা, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা এবং ইলিশ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। কিন্তু এসব উদ্যোগ অনেকটা কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত তিনটি প্রতিবেদনে এমন অনেক তথ্যই উঠে এসেছে, যা জাতীয় স্বার্থবিরোধী এবং রুপালি ইলিশের জন্য সর্বনাশা।
ইলিশ এই সময়টায় ডিম ছাড়তে নদীতে আসে। তাই মা-ইলিশ রক্ষায় গত ১৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ৩ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ শিকার বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু বাস্তবে কি ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল? না, ছিল না। দিনে ও রাতে দুই দফা জোয়ারের সময় ঝাঁকে ঝাঁকে মা-ইলিশ নদীতে প্রবেশ করে। আর জোয়ারের সময়ে অসংখ্য নৌকা নদীতে জাল ফেলে।
অভিযোগ আছে, প্রশাসন ও পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করেই চলে মা-ইলিশ নিধন। তা ছাড়া নিজস্ব ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রশাসনের স্পিডবোট বা টহল নৌকা দিয়ে নজরদারি করা হয়। এই নৌকা যাত্রা করলেই মোবাইল ফোনে খবর চলে যায় জেলেদের কাছে। তারা দ্রুত লুকিয়ে পড়ে। এই জেলেদের মধ্যে প্রশাসনের খাদ্য সহায়তা পাওয়া এবং না পাওয়া উভয় ধরনের জেলেই রয়েছেন। প্রতিবেদক দেখেছেন, একজন জেলের জালে ওঠা ৯টি ইলিশের মধ্যে সাতটিরই পেটে ডিম ছিল। আর রয়েছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের ছড়াছড়ি।
ইলিশ ধরার জন্য সর্বনিম্ন ৬.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের সুতার জাল ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও প্রায় সবাই আরো কম ব্যাসের কারেন্ট জাল ব্যবহার করেন। ১.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের জালও রয়েছে। আছে মশারির মতো পাইজাল, এতে সব ধরনের মাছের পোনা আটকায়। এসব জাল ব্যবহারের জন্য পুলিশকে মাসে নির্ধারিত অঙ্কের টাকা দিতে হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে জাটকা ও মা-মাছ সংরক্ষণ করা কিভাবে সম্ভব হবে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সংরক্ষিত সময়ে জেলেদের প্রণোদনা বা সহায়তা বাড়াতে হবে। মাছ আহরণ, পরিবহন, সংরক্ষণ ও বিক্রয়—সব পর্যায়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। যারা আইন লঙ্ঘন করবে, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমাদের জাতীয় সম্পদ ইলিশকে রক্ষা করতেই হবে।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন