দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশ কি নতুন করে অশান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে? গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা থেকে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পর্যবেক্ষকমহলে। দেখা যাচ্ছে, নতুন করে অশান্ত হতে শুরু করেছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। অস্থিরতা ক্রমেই বাড়ছে।
প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফায় ধাওয়াধাওয়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষের সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ জাতীয় নেতাদের ছবি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আহত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
একজনের পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙচুর থেকে হলে থাকা মোটরসাইকেল, সিসিটিভি, ক্যান্টিনের গ্লাস, ছাদের দরজা, ক্যান্টিনের দরজা, হলের সামনে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, ডাস্টবিন, পানি খাওয়ার কলসহ বাদ যায়নি কোনো কিছুই।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের অবৈধ শিক্ষার্থীদের বের করে কয়েকজন আবাসিক ছাত্রকে হলে তুলে দেওয়া হলেও সেখানে এক ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়ে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আসন নিয়ে গোলযোগ একেবারেই নতুন ঘটনা নয়। অনেক আগে থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে আসছে। আবাসিক হলের আসন বা সিট রাজনৈতিক দখলে যাওয়াও নতুন নয়।
শুধু আবাসিক হলের আসন নয়, আরো অনেক ঘটনারই রাজনৈতিক মোড়ক দেওয়া হয়।
১৯৭৫ সালের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা ধরনের রাজনীতি, ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার পরিবেশে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মুক্ত থাকার কোনো সুযোগ ছিল না।
স্থানীয় রাজনীতি, আধিপত্য বিস্তার ইত্যাদি খুব সহজেই জায়গা করে নিয়েছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান। সেখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে যে ধরনের সম্পর্ক থাকা দরকার, তার অভাব রয়েছে বলেই মনে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক অস্থিরতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এখানে একটি অপশক্তিরও উসকানি থাকতে পারে। আমরা আশা করব, সব ধরনের সংকট মিটিয়ে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে।