বাজারে লাগামহীন কারসাজির মাধ্যমে দুর্বল মৌলভিত্তির, জাংক শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেক কম্পানি কারসাজি করে দাম বাড়িয়েছিল। পরে শেয়ারগুলো বিক্রি করে শত শত কোটি টাকা মার্কেট থেকে তুলে নিয়ে গেছে। এখন সেগুলো তাদের ব্যক্তিগত টাকা হয়ে গেছে।
শেয়ারবাজারের মূল সমস্যাটি হচ্ছে ভালো শেয়ারের অভাব।ভালো শেয়ার হলো, যা দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ উপযোগী শেয়ার। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গত মঙ্গলবার রাজধানীর নিকুঞ্জে দেশের বড় পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কার্যালয়ে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এ সময় তিনি বলেছেন, বাজারে ভালো কম্পানির সংখ্যা না বাড়ালে বেইস বড় হবে না।
দেশীয়, সরকারি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে তালিকায় আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত নয়, বিদেশি ও পারিবারিকভাবে পরিচালিত বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানকেও পুঁজিবাজারে আসতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পুঁজিবাজারের সংস্কারের মাধ্যমে তাত্ক্ষণিক, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। পুঁজিবাজারের সংকট মোকাবেলায় নতুন কোনো নীতিমালা গ্রহণ করা হবে না, বরং বর্তমান পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য সংস্কারের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বরাবরই বলছেন, একসময় পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে আইসিবির যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। সরকারও প্রতিষ্ঠানটিকে অনেক সহায়তা দিয়েছে। পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আইসিবিকে ফান্ড সহায়তা দেওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি নতুন করে ভালো কোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারবে। আবার এর মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগও বাড়বে। পাশাপাশি দেশীয় ভালো কম্পানিগুলোকেও উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশে বেশ কিছু ভালো কম্পানি আছে। যেসব মাল্টিন্যাশনাল কম্পানি শেয়ারবাজারের বাইরে আছে, তাদের শেয়ারবাজারের তালিকায় আনতে হবে।
আস্থার সংকট অনেক বিনিয়োগকারীকে পুঁজিবাজার থেকে দূরে রেখেছে। শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বাজারকে স্থিতিশীল রেখে আস্থার সংকট কাটিয়ে ওঠা। আমাদের প্রত্যাশা, আস্থার সংকট কাটিয়ে গতিশীল হবে আমাদের শেয়ারবাজার।