English

23 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতি: তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নিন

- Advertisements -

বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। সর্বোচ্চ জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি সত্যিকার মানুষ সৃষ্টি হবে এখান থেকে। যাদের থাকবে নীতি, আদর্শ, দেশপ্রেম, মানবতা, রুচি, মূল্যবোধসহ অন্য গুণাবলি। আর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হবেন সেই সব মানুষ গড়ার সর্বোচ্চ কারিগর। নীতি-আদর্শের দিক দিয়ে তাঁরা হবেন একেকজন অনুকরণীয় মানুষ। আর এখন কী হচ্ছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-উপাচার্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে অন্যান্য স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও। তাহলে এই শিক্ষকরা আদর্শ মানুষ তৈরি করবেন কিভাবে?

আদর্শ মানুষ তৈরির মতো পরিবেশ-পরিস্থিতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় নেই বললেই চলে। একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হতো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। এখন বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা বাংলাদেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ এক হাজারের মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ৩৬টি, এমনকি পাকিস্তানের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর কারণ, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষায়-গবেষণায় অনেক পিছিয়ে গেছে।

এই অধোগতি কিভাবে রোধ করা যাবে, কিভাবে শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করা যাবে—সেসব দিকে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টি খুব কমই আছে। তাঁদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড আমাদের তেমন ধারণাই দেয়। অভিযোগ উঠেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে। তিনি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে মেয়াদ শেষের আগমুহূর্তে ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন। এই নিয়োগে বিপুল অঙ্কের ঘুষ নেওয়া এবং স্বজনপ্রীতি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধেও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুসন্ধানেও কিছু কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানা গেছে। তাহলে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ ফিরবে কিভাবে?

শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই দুর্নীতির কালো হাত বেশ শক্তপোক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। লজ্জা হয় এই ভেবে যে বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য দেওয়া বই বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হয় কিংবা শিক্ষার্থীদের কিনে নিতে হয়।  প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, করোনা মহামারিতে এক বছরেরও বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বন্ধ থাকেনি দুর্নীতি। এই সময়ে বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য ২০০ সরকারি কলেজে কয়েক গুণ দাম দিয়ে ডিজিটাল ক্যামেরা কেনা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে অত্যধিক দামে এসব ক্যামেরা কেনায় প্রকল্প পরিচালক (পিডি) অধ্যাপক মো. নূরুল হুদাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি শোকজও করা হয়েছে।

আমরা উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু শিক্ষায় এভাবে পিছিয়ে গেলে তা কি সম্ভব হবে? প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে শিক্ষার মানোন্নয়নে আমাদের অনেক বেশি যত্নবান হতে হবে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন