প্রতিবছর ধানের মৌসুমে সরকারের পক্ষ থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করা হয়। সরকারের এই সংগ্রহ অভিযানের উদ্দেশ্য হচ্ছে সরাসরি কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো। কৃষক যাতে কোনোভাবেই ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতেই কৃষকের কাছ থেকে কেনা হয় ধান ও চাল। অন্যদিকে দেশের রাইস মিলগুলো থেকেও সরকার চাল কিনে থাকে।
এ ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে রাইস মিলগুলোর চুক্তি সম্পাদিত হয়। সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে সরকারের খাদ্যগুদামে মিলগুলো চাল সরবরাহ করে থাকে। সরকার প্রয়োজনের সময় এই চাল খোলাবাজারে বিক্রি করে। তাতে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হয়।
গত অক্টোবরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আমন ধানের ক্রয়মূল্য প্রতি কেজি ২৮ টাকা মূল্যে তিন লাখ টন ধান ও প্রতি কেজি ৪২ টাকা মূল্যে পাঁচ লাখ টন চালও সংগ্রহ করা হবে। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে ১৭ নভেম্বর থেকে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও দেশের অনেক স্থানে এখনো এই কার্যক্রমের শুরুই হয়নি। কোনো কোনো জায়গায় সংগ্রহ শুরু হলেও তার গতি মন্থর। সরকারি মূল্যের চেয়ে ধান-চালের বর্তমান বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় লোকসানের ভয়ে ধান-চাল সরবরাহের জন্য অনেক চালকল মালিক চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে আমন ধান ও চাল ক্রয় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১৮ লাখ মেট্রিক টন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে সরকার। গত ২৮ এপ্রিল থেকে সারা দেশে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ শুরু হয়, চলে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। তবে এ নির্ধারিত সময়ে বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫৯ শতাংশই পূরণ হয়নি। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় এবং সরকারি গুদামে ধান বিক্রির ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়াগত জটিলতা থাকায় কৃষকরা স্থানীয় বাজারেই ধান বিক্রি করে দেন। এই সময়ে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ লাখ টন। তার বিপরীতে সংগ্রহ হয় ১১ লাখ ২০ হাজার ৮৮ টন।
প্রতিবছর ধানের মৌসুমে সরকারের পক্ষ থেকে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্দেশ্য হচ্ছে সরাসরি কৃষকদের পাশে দাঁঁড়ানো। কৃষক যাতে কোনোভাবেই ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতেই কৃষকের কাছ থেকে কেনা হয় ধান ও চাল।
অন্যদিকে দেশের রাইস মিলগুলো থেকেও সরকার চাল কিনে থাকে। এ ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে রাইস মিলগুলোর চুক্তি সম্পাদিত হয়। সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে সরকারের খাদ্যগুদামে মিলগুলো চাল সরবরাহ করে থাকে। সরকার প্রয়োজনের সময় এই চাল খোলাবাজারে বিক্রি করে। তাতে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হয়। সরকারের উদ্দেশ্য মহৎ হলেও অতীতে দেখা গেছে, অনেক সময় কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। খাদ্যগুদামের শর্ত জটিলতায় গুদামে ধান বিক্রি করতে সমস্যায় পড়েন প্রকৃত কৃষকরা। ধারণা না থাকায় সরকারি দামে গুদামে ধান দিতে সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ ময়েশ্চারাইজার বা আর্দ্রতা নিশ্চিত করতে গিয়ে চাষিরা বিপাকে পড়েন।
অতীতে দেখা গেছে, ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অনেক সময় পূরণ হয় না। আমাদের প্রত্যাশা এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। বাজারে কোনো অস্থিরতা তৈরি হবে না।