রেলের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। লাগামহীন দুর্নীতি ছাড়াও নানা ধরনের অব্যবস্থাপনায় নিমজ্জিত রেল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ঘুম ভেঙেছে বলে মনে হয় না। বরং নতুন করে আবারও অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।
তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টিও রহস্যজনক। এ অবস্থায় প্রকল্প পরিচালক (পিডি) পরিবর্তনের ফলে বিষয়টি নিয়ে আরও নানা ধরনের প্রশ্ন উঠবে, এটাই স্বাভাবিক। নতুন পিডি তাড়াহুড়ো করে অর্থ পরিশোধ করতে চাচ্ছেন। এতে রহস্যের ডালপালা আরও বাড়ছে। এসব রহস্য উদঘাটন জরুরি হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, ইঞ্জিনগুলোর ২৫ শতাংশ অর্থ অগ্রিম দেওয়া আছে। দেশে আসার পর ৬৫ শতাংশ এবং গুণগত মান যাচাই শেষে বাকি ১০ শতাংশ অর্থ পরিশোধের কথা ছিল। তবে নিুমানের ইঞ্জিন সরবরাহের কারণে চুক্তিমূল্যের ৬৫ শতাংশ অর্থ আটকে দেন তৎকালীন পিডি। একইসঙ্গে এ অনিয়ম-দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
চুক্তি অনুযায়ী ইঞ্জিন সরবরাহ না করে অন্য মডেলের ইঞ্জিন সরবরাহ করা হলেও সম্প্রতি সেসব গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়ার কারণ কী? সরবরাহ করা ইঞ্জিনগুলো আগে বেশ কয়েকবার ট্রায়াল করা হলেও চুক্তিতে থাকা সর্বোচ্চ গতি তোলা যায়নি। এরপরও এসব ইঞ্জিন গ্রহণ করা হলে রাষ্ট্রের যে ক্ষতি হবে, এর দায় কে নেবে?
সরকার রেলের উন্নয়নে নতুন নতুন পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। এ অবস্থায় রেলের দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতিবাজ ও তাদের পৃষ্ঠপোষকরা বহাল তবিয়তে থাকলে রেল নিয়ে সরকার যত পরিকল্পনাই করুক না কেন, তাতে দুর্নীতিবাজদের পকেট ভারি হওয়া ছাড়া কাজের কাজ যে কিছুই হবে না, তা বলাই বাহুল্য। দুর্নীতি বজায় রেখে জাতিকে যুগোপযোগী রেল উপহার দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।