আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছে, বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করছে তারা।
এ কথা অনস্বীকার্য, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন একটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন গতিশীল হতে পারে না; দীর্ঘস্থায়ী হয় না। জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনেরও পূর্বশর্ত হচ্ছে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। বিএনপি ও তার সমমনারা শুরু থেকে চেয়েছে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। অন্যদিকে সরকার অনির্বাচিত কোনো পক্ষের হাতে ক্ষমতা না দেওয়ার সিদ্ধান্তে ছিল অনড়। বর্জনের পাশাপাশি নির্বাচন প্রতিহত করতে মাঠে আন্দোলন করছে বিরোধী দল।নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে নানা শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর আগেই সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। পিরোজপুরে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর আহত এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জামালপুরে সংঘর্ষ চলাকালে শতাধিক চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে।জামালপুর ও ফরিদপুরে সংঘর্ষে ৩৫ জন আহত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গত রবিবার রাতে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম বা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।গত ৩ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন থেকে জারি করা এক পরিপত্রে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখতে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাস্তানদের তালিকা করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়। ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাসহ সব ধরনের বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা জোরদার করতে বলা হয়।এমন পরিস্থিতিতে গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে সারা দেশে অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্দেহভাজন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত আরেক খবরে বলা হয়েছে, দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত ১১ মাসে চার হাজারের বেশি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।গত সোমবার নির্বাচন কমিশন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধিদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ১৩ দিন সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে।নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।