English

21 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

ভোগ্য পণ্যে শুল্ক কমান: জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে

- Advertisements -
সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করে দেওয়া। জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে মান বৃদ্ধি করতে পারলে সমাজে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। দিন যত যাচ্ছে, জীবনযাত্রার ব্যয় তত বাড়ছে। কিন্তু ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আয় বাড়ছে না।
ফলে সংকট দেখা দিচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারে। সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছে স্থির আয়ের মানুষ।
আগামী মাসে জাতীয় বাজেট পেশ করা হবে। প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, নতুন অর্থবছরে জীবনযাত্রার ব্যয় আরো বাড়বে।
কারণ আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে রাজস্ব আদায়ের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আগামী বাজেটে বিভিন্ন ক্ষেত্রে করহার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হচ্ছে।
অন্যদিকে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির জেরে মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেলেও বাড়ানো হচ্ছে না করমুক্ত আয়সীমা। বর্তমানে ৩৭ লাখ ব্যক্তি শ্রেণির করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে থাকেন।
এর মধ্যে বড় অংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণির করদাতা। এই শ্রেণির করদাতাদের জন্য বাজেটে আয়কর খাতে ছাড় থাকছে না। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও আয়কর আদায়ের কথা চিন্তা করে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হচ্ছে না।
তবে করদাতা হয়রানি কমাতে আয়কর রিটার্ন অ্যাসেসমেন্টের বিধান বাতিল করা হচ্ছে। অনেক পণ্যে ভ্যাটহার ১৫ শতাংশ করায় এর প্রভাব পড়বে বাজারে।
অন্যদিকে চাল, গম, ভুট্টা, সরিষাবীজ, পরিশোধিত সয়াবিন, পাম অয়েল, সানফ্লাওয়ার বীজ, তুলাবীজ, বিভিন্ন শাক-সবজির বীজ, ক্রুড অয়েল, সার, প্রাকৃতিক গ্যাস, বিটুমিন, কয়লা, জিপসাম, ভিটামিন, ইনসুলিন, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের অত্যাবশ্যক ওষুধ এবং ভ্যাকসিন ও ওষুধের কাঁচামাল, বিভিন্ন ধরনের দরকারি রাসায়নিক ইত্যাদির ওপর বসতে যাচ্ছে বাড়তি শুল্ক। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে মোবাইল ফোনে কথা বলতে গেলে বা ইন্টারনেট ব্যবহারে গুনতে হবে বাড়তি অর্থ।
তবে ভোক্তাদের স্বস্তিতে রাখতে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি ভোগ্য পণ্য আমদানিতে শুল্ক কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু নিম্নবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্তই নয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নাকাল মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্তরাও। বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্য উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে কোনো না কোনো পণ্যের দাম।
অন্যদিকে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চাহিদায় কাটছাঁট করেও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সর্বশেষ তথ্য মতে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ, যা এক বছর আগেও এর অর্ধেক ছিল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা এবং ডলারের সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়নের বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ট্যাক্সের পরিমাণও বেড়ে যায়। এতেও মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব পড়ে। ফলে অতি প্রয়োজনীয় পণ্য, যেগুলো সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে, সেগুলোতে করের বোঝা শূন্য কিংবা সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত।
সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করে দেওয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের যাতে ক্রয়ক্ষমতা ও আয়-রোজগার বাড়ে, সেটার ওপর জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে বাজেটে কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিধি আরো বাড়ানোর বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের পরামর্শ, সরকারের বাজেট প্রস্তাবে সংকট সমাধানের সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ থাকতে হবে। আসছে অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির কারণে বিপাকে পড়া মানুষকে সুরক্ষা দিতে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দিচ্ছেন তাঁরা।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন