বাংলাদেশ ব্যাংক বা আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা (বিএফআইইউ) কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগ দিতে পারে না। রিসিভার নিয়োগ দেওয়া একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
এ ধরনের খবরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এটিই স্বাভাবিক।
ফলে দেশের অর্থনীতিতে নানামুখী সমস্যার সৃষ্টি হয়।
এমনিতেই দেশের অর্থনীতি নানা রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। ছোট-বড় সব ব্যবসার ক্ষেত্রেই নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। শিল্প, ব্যবসা, বিনিয়োগ—সব কিছুই যেন তার স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ফেলছে। অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে আগের সরকারের ভুল নীতির রেশ কাটেনি এখনো।উচ্চ সুদের হারে বিনিয়োগ স্থবিরতা প্রকট হচ্ছে। সহিংসতা, শিল্পাঞ্চলে টানা অস্থিরতা, বিক্ষোভ, সংঘর্ষ থেমে নেই।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। হয়রানিমূলক মামলাসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা মহলে আস্থাহীনতা, শঙ্কা, ভয় আর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। থমকে আছে ব্যবসার প্রসার ও নতুন বিনিয়োগ। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকির পাশাপাশি ব্যবসা প্রসারেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এই অবস্থায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াবে। এটিই স্বাভাবিক। বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে যাঁরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছেন, তাঁরাই নিগৃহীত ছিলেন। বেকারদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে দরকার বিনিয়োগ, কিন্তু দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই। বিনিয়োগকারীরা এখন চতুর্মুখী বিপদের সম্মুখীন। ব্যবসায়ী নেতাদের ভাষ্য, ভুল তথ্য পরিবেশন করে বিগত সরকারের সময় ভুল নীতি তৈরি করা হয়েছে।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী-শিল্পপতি, বিনিয়োগকারী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হওয়া মিডিয়া ট্রায়ালে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তারা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে আমানত তুলে নিচ্ছে। শুধু ব্যাংক নয়, মিডিয়া ট্রায়ালের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন খাতেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার তিন মাস অতিবাহিত হলেও দেশের অনেক কিছুই এখনো স্বাভাবিক হয়নি। কিন্তু যে খাতে অতি দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে, সেটি হচ্ছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। এ খাতের স্বাভাবিক অবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার বিষয়টি। কাজেই এমন পদক্ষেপ নিতে হবে, যা দেশের ব্যবসায়ীদের আতঙ্কগ্রস্ত করবে না। ব্যবসায়ীরা যেন কোনো আক্রোশের শিকার না হন, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।