সারা দেশে মাদকের কারবার ছড়িয়ে পড়েছে। বেড়েছে মাদকসেবীর সংখ্যা। এসব খবর এখন পুরনো। দেশে আবার ভয়ংকর মাদক হেরোইনের কারবার বাড়ছে। ইয়াবাসহ নতুন মাদকের আগ্রাসনের মধ্যেও হেরোইন পাচার কমেনি, বরং বেড়েই চলেছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত দুই মাসে ভারত থেকে ঢাকায় প্রবেশের সময় হেরোইনের কয়েকটি বড় চালান আটক করেছে র্যাব। কারবার বাড়ায় প্রাণঘাতী এই মাদকে নতুন করে অনেকে আসক্ত হওয়ার শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, ইয়াবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হেরোইনের কারবার। বছরে গড়ে দুই হাজার কেজি হেরোইন যাচ্ছে মাদকসেবীদের হাতে।
প্রকাশিত খবর থেকে এটা স্পষ্ট যে মাদক কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অভিযান চালালে মাদক কারবারিরা কিছুদিনের জন্য নিজেদের লুকিয়ে রাখে। তার পর আবার সেই পুরনো পথে ফিরে যায়। মাদকের বড় বাজার বাংলাদেশ। সীমান্ত গলিয়ে ফেনসিডিল ও ইয়াবার মতো মাদক দেশে ঢুকছে। মাদকের অবৈধ ব্যবসা মানেই কাঁচা টাকা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, রাজনীতিবিদসহ প্রভাবশালী বিভিন্ন মহল মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ আছে। মাদকের রাশ টেনে ধরা যাচ্ছে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কিছুসংখ্যক সদস্যও এই কারবার থেকে সুবিধা নিয়ে থাকে বলে অভিযোগ আছে। সম্প্রতি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের পর অর্থ আদায় করে মাদক পাচারকারীদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানার ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের তিন পুলিশ কনস্টেবলসহ ছয়জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আমরা চাই মাদকের অশুভ চক্র ও ব্যবসা বন্ধ হোক। মাদক কারবারিরা যেন কোনো অবস্থায়ই সমাজপতি হয়ে উঠতে না পারে। তরুণসমাজের একটি বড় অংশ মাদকের অন্ধকার জগতে ঢুকে গেছে। তারা শুধু নিজেদের জীবনই ধ্বংস করছে না, নানা অপরাধে জড়িয়ে সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট করছে। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে অনেক আগেই। সমাজে তার প্রতিফলন দেখতে চাই আমরা। কোনোভাবেই যেন মাদকের চালান দেশে ঢুকতে না পারে, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে, তরুণ ও যুবসমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সব ধরনের মাদকের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর অবস্থান নিতে হবে। নতুন করে শক্ত হাতে অভিযান চালিয়ে মাদকের কারবার বন্ধ করা হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।