English

26 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
- Advertisement -

বাস থেকে ফেলে হত্যা: দ্রুত বিচার নিশ্চিত করুন

- Advertisements -

সড়কে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলোকে দুর্ঘটনা না বলে হত্যাকাণ্ড বলাই যৌক্তিক। গত বুধবার রাতে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, কথা-কাটাকাটির জের ধরে আতিকুল ইসলাম (১৫) নামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে বাস থেকে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর তার ওপর দিয়েই বাস চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা বাসটি আটক করে এবং চালককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরদিন বৃহস্পতিবার আতিকুলের সহপাঠী ও স্থানীয় জনতা প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে।

বাস শ্রমিকদের এমন নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ নতুন নয়। বাস থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করার ঘটনা আগেও ঘটেছে। ২০১৮ সালের ২১ জুলাই চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে হানিফ পরিবহনের একটি চলন্ত বাস থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পায়েলকে ফেলে দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে বাস থেকে ফেলে হত্যা করা হয়।

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে চলন্ত বাস থেকে ফেলে জসিম উদ্দিন (৪৫) নামের এক যাত্রীকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জে ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এক নারীকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৭ মার্চ কেরানীগঞ্জে বাকপ্রতিবন্ধী এক নারীকে ভাড়া দিতে না পারায় চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া বাসে ধর্ষণ ও হত্যার বেশ কিছু ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। উল্লিখিত পায়েল হত্যা মামলার রায়ে বিচারক পরিবহন শ্রমিকদের মাদকাসক্তি ও যাত্রীদের সঙ্গে আচরণ পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি, আজ পর্যন্ত তেমন উদ্যোগ আমাদের দৃষ্টিতে আসেনি। এ ছাড়া কয়েকটি মামলায় দ্রুত রায় হলেও বেশির ভাগ মামলা বছরের পর বছর চলতে থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিচারের এই দীর্ঘসূত্রতাও পরিবহনসংশ্লিষ্ট নিষ্ঠুরতা বাড়াচ্ছে।

পরিবহনে এমন নিষ্ঠুরতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবহন শ্রমিকদের একটি বড় অংশ নেশাগ্রস্ত। মানবিকতা, মূল্যবোধ এদের কাছে সামান্যই মূল্য পায়। তদুপরি সংঘবদ্ধতার কারণে এদের মধ্যে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর প্রবণতাও কাজ করে। পরিবহন শ্রমিকদের ফেডারেশন বা ইউনিয়নের কাছে অতীতে যে নমনীয়তা দেখানো হয়েছে, সেটিও এই খাতে স্বেচ্ছাচারিতাকে উৎসাহিত করেছে। আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ধরনের নিষ্ঠুরতার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন