বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিলে যেতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু মেট্রোরেলে লাগবে মাত্র ৩৮ মিনিট। মেট্রোরেলে প্রতিদিন পাঁচ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার যানজট যেমন কমবে, তেমনি জিডিপিও ১ শতাংশ বাড়বে। ঢাকার অসহনীয় যানজটে কেবল মানুষের দুর্ভোগই বাড়ছে না, দেশও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মেট্রোরেল চালুর আগে কয়েকটি বিষয় আমলে নিতে হবে। প্রথমত, স্টেশন এবং এর সংযুক্ত সড়কগুলোর ব্যবস্থাপনা। স্টেশনে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় এড়াতে হবে, যাতে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ওঠানামা করতে পারেন। এরপর স্টেশন থেকে সংযুক্ত সড়কগুলোতে কী ধরনের বাহন চলবে, তা–ও আগে থেকে ঠিক করতে হবে। ঢাকা শহরের সড়ক রুটগুলো উত্তর-দক্ষিণমুখী। সে ক্ষেত্রে পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মানুষ যাতে মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও রাখতে হবে।
মেট্রোরেল পুরোপুরি চালু হতে আরও ১৫ মাস সময় লাগবে। এই সময়ে নগরের যানজট কীভাবে সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায়, তা-ও কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে। ঢাকা শহরের সড়ক পরিবহনে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছে, যা কেবল যানজটই বাড়াচ্ছে না, অসুস্থ প্রতিযোগিতার জন্য দুর্ঘটনারও কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হক শহরজুড়ে বাস ফ্র্যাঞ্চাইজি বা এক রুটে এক কোম্পানির বাস চালুর ব্যাপারে উৎসাহী ও তৎপর ছিলেন। তাঁর উদ্যোগে এই পদ্ধতিতে হাতিরঝিল থেকে গুলশান ২ পর্যন্ত ‘ঢাকা চাকা’ চালু হয়েছিল এবং তা সফলভাবে চলছে। ৭ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে আরও কয়েকটি রুটে একই পদ্ধতিতে বাস চালু করার পরিকল্পনা আছে। ধীরে ধীরে সব রুটেই এই পদ্ধতিতে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের হস্তক্ষেপে যেন এই পরিকল্পনা মাঝপথে থেমে না যায়, সেই নিশ্চয়তাও নগরবাসী পেতে চায়।