জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে কেউ গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না, অনাহারে থাকবে না। স্বাধীনতার পর সেই লক্ষ্যে তিনি কাজও শুরু করেছিলেন। কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় কিছু বিশ্বাসঘাতকের ষড়যন্ত্রের শিকার হন তিনি। তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তারপর বাংলাদেশকে ধাবিত করা হয় উল্টো পথে। তাঁর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আবার সঠিক ধারায় এগিয়ে চলেছে।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে একের পর এক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার মিরপুরে বস্তিবাসী গৃহহীনদের বসবাসের জন্য ৩০০ ফ্ল্যাটের বরাদ্দ হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব ফ্ল্যাটে বস্তিবাসীরা বস্তির চেয়েও কম ভাড়ায় বসবাস করতে পারবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা বস্তির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ছেড়ে নিজের গ্রামে ফিরে যেতে চান, তাঁদের জমি না থাকলে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর মাধ্যমে জমিসহ ঘর করে দেওয়া হবে। যাঁদের জমি বা ভিটামাটি আছে, তাঁদেরও ঘর করে দেওয়া হবে। তাঁদের আয়-উপার্জন বৃদ্ধির জন্য ঋণ প্রদানের পাশাপাশি প্রয়োজনে ছয় মাসের খাবার বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হবে।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মৌলিক অধিকারগুলোর অন্যতম হচ্ছে সবার জন্য বাসস্থানের নিশ্চয়তা। সেই সাংবিধানিক লক্ষ্য বাস্তবায়নের চিন্তা থেকেই ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বস্তিবাসীদের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
তার মধ্যে একটি ছিল ভাসানটেকে ফ্ল্যাট নির্মাণ। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কিছু ভেস্তে দেয়। আবার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে তাঁর সরকার নতুনভাবে কাজ শুরু করে। শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, এ দেশে আর কেউ গৃহহীন থাকবে না। তিনি তাঁর ঘোষণা বাস্তবায়নের পথে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চলেছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এরই মধ্যে কয়েক লাখ গৃহহীনের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এবার শহরাঞ্চলে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করা বস্তিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের কাজও জোরেশোরে শুরু হয়েছে। রাজধানীর মিরপুরে বস্তিবাসীদের মধ্যে ভাড়াভিত্তিক ৩০০ ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আরো ২৩৩টি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হবে। বহুতল ভবনে এই ৫৩৩টি আধুনিক ফ্ল্যাট নির্মাণে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১৪৯ কোটি টাকা। বস্তিবাসীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এমন উন্নত বাসস্থানের উদ্যোগ বাংলাদেশে এটিই প্রথম।
তৃণমূলে উন্নয়ন না হলে সে উন্নয়ন কখনো টেকসই হয় না। ভারসাম্যপূর্ণ সমাজও প্রতিষ্ঠিত হয় না। জনগণের কাছে দায়বদ্ধ বলেই বর্তমান সরকার সেই লক্ষ্যে দৃঢ় পায়ে এগিয়ে চলেছে।
গ্রাম পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটসহ আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। উন্নয়নের ছোঁয়া প্রত্যন্ত গ্রামেও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করি, গ্রামের দরিদ্র মানুষ এখন থেকে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি গ্রামেই সুন্দর জীবনযাপনের সুযোগ পাবে।